সিলেটে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে চার ভাইসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ০৭:৪৩ বিকাল

ফাইল ছবি
সিলেটের ওসমানীনগরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেখ মাসুক মিয়া (৩৫) হত্যা মামলায় চার সহোদরসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের হলো-
১. শেখ আলফু মিয়া (৪১)
২. শেখ পংকী মিয়া (৪৩)
৩. শেখ তোতা মিয়া (৫৭)
৪. শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩)
৫. লাভলী বেগম (পংকী মিয়ার স্ত্রী)
৬. শেখ আনোয়ারা বেগম (লেবু মিয়ার স্ত্রী, বয়স ৪৮)
৭. ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬), পিতা মৃত আখলাছ আলী
৮. হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩), পিতা আলা উদ্দিন
রায়ের সময় সাতজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দিপু মিয়া পলাতক রয়েছেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকেল ৩টার দিকে বাড়ি থেকে গোয়ালাবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন মাসুক মিয়া। রাত পর্যন্ত তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সন্ধ্যায় স্ত্রী মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রথমে ফোন রিং হলেও পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন ওসমানীনগরের দাসপাড়া এলাকায় একটি ধানক্ষেতে মাসুক মিয়ার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। মরদেহ শনাক্তে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খবর পেয়ে নিহতের ভাই আলফু ও তোতা মিয়া গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
ঘটনার পর নিহতের ভাই শেখ আলফু মিয়া অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ওসমানীনগর থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে তদন্তে নেমে ওসমানীনগর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মাঈন উদ্দিন নিহতের ভাই আলফু, পংকী ও তোতা মিয়াকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেন।
পরে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে উঠে আসে পারিবারিক বিরোধ ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত সোমবার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি (এপিপি) আল আসলাম মুমিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসে থাকা অবস্থায় নিহত শেখ মাসুক মিয়া ভাইদের মাধ্যমে জমি কেনার জন্য টাকা পাঠাতেন। দেশে ফিরে সেই জমি নিজের নামে দলিল করে দিতে বললে পারিবারিক বিরোধ শুরু হয়। পরিকল্পিতভাবে মাসুক মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।
রায় ঘিরে আদালত এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেলা পুলিশ। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের আদালতে আনা হয়। রায় শুনে কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাধারা/এসআর