মুরাদনগরে নারী নির্যাতন
দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব থেকে মব তৈরি, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে শাহ পরান গ্রেপ্তার
প্রকাশিত: জুলাই ০৪, ২০২৫, ০৩:১০ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে শারীরিক নির্যাতন করে তার অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী নারী প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলেন একই গ্রামের দুই ভাই- ফজর আলী এবং শাহ পরান।
দুই মাস আগে ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে ফজর আলী এবং শাহ পরানের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য শালিস বসে, যেখানে জনসম্মুখে বড় ভাই ফজর আলী ছোট ভাই শাহ পরানকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এর পর থেকেই শাহ পরান বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকেন।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ঘটনার কিছুদিন আগে ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ঋণ নেন। এই সুদের টাকা আদায়ের অজুহাত দেখিয়ে ২৬ জুন রাতে ফজর আলী কৌশলে ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করেন।
ঠিক সেই সময় শাহ পরান এবং একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ ৮–১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি বাড়ির চারপাশে ওত পেতে ছিল। পরে তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ বলেন, ঘটনার পর শাহ পরানসহ অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। গোপন তথ্য এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান স্বীকার করেছেন যে, বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে তিনি পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন এবং অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে মব তৈরি করেন।
র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, শাহ পরান এ ঘটনার জন্য ইমোতে বার্তা পাঠিয়েছিলেন, যা র্যাবের হাতে রয়েছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, “অপরাধ অপরাধই, রাজনৈতিক পরিচয় এখানে মুখ্য নয়। শাহ পরান পেশায় সিএনজি চালক এবং তার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
বাংলাধারা/এসআর