ডিএনডির জলাবদ্ধতার নিরসনের দাবিতে জেলা প্রশাসককে গিয়াসউদ্দিনের স্মারকলিপি
প্রকাশিত: আগস্ট ০৩, ২০২৫, ০৫:০২ বিকাল

চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি বাদে ভিতর বসবাসরত প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি চরমে। ইতিমধ্যে ভারীগণ বৃষ্টিপাতের কারণে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয় পানির নিচে তলিয়ে ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে। বর্তমান সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করে রবিবার (৩আগস্ট) নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন এসব কথা বলেন।
স্বৈরশাসকের যারা ছিল এখানে ক্ষমতধর তাদের কাছে আবেদন নিবেদন করেছে যে আমাদের দুঃখ দুর্দশা কথা ভেবে এই এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। তাদের পক্ষ থেকে বার বার আশ্বাস দিয়েছে কোন কাজ হয়নাই। নারায়ণগঞ্জের গডফাদার বক্তব্য দিয়ে বলেছে সরকারের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এনেছে। ডিএনডির মানুষের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য। কিন্তু কোন মানুষ এই কাজ দেখে নাই। কোন উপকার পায়নাই। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় । এই জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাট যেমন তলিয়ে যায়, বাড়িঘর তলিয়ে যায় শিল্প কলকারখানা, স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মানুষ যাতায়াত করতে পারে না,বাজার সদাই করতে পারে না,বাড়িঘরের ভিতরে এমন ভাবে পানি প্রবেশ করে আছে যে জনজীবন সম্পন্ন বিপন্ন। বারবার তারা দাবী করেছে জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য।
আমি ইতিমধ্যে দুই দুইবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে এই জলাবদ্ধতা দূর করে জনগণের দুর্দশা লাগব করার জন্য অনুরোধ করেছি যার অনুলিপি আমি জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে দিয়েছি আপনারা জানেন এগুলো সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
আজকে আমরা মাননীয়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আমরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নিকট স্মারকলিপি প্রদান করব আমরা আশা করব নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন আমাদের এই জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে আমাদের এই স্মারকলিপি কতটুকু বাস্তবসম্মত এবং নেয়সম্মত বিবেচনা করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের এই স্মারকলিপি পৌঁছে দেবেন। এবং আপনারা অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি জলাবদ্ধতার সমাধানের লক্ষ্যে আরো বলেন, আমরা জানি আমাদের বানবাসি মানুষেরদুঃখ দুর্দশা দূর করার জন্য জেলা প্রশাসক ইতিমধ্যে কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু প্রয়াস নিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ কিন্তু এই ক্ষুদ্র প্রয়াসে হবে না। এটার জন্য আমরা দুটি প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছি এখন
একটি হচ্ছে সর্বকালীন ট্রাস্ট প্রোগ্রাম করতে হবে। যে করেইহোক বিশেষ ব্যবস্থায় এখন যেই জলাবদ্ধতা তা নিরসনের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয় হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী।
আপনারা জানেন বিগত কিছুদিন যাবত ভীষণভাবে বর্ষা বৃষ্টি এত বৃষ্টি এ বছর যা কল্পনা করা যায় না। এর ফলে ডিএনডি তলিয়ে গেছে বিএনডির মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ। ছেলেমেয়েরা, শিশু বাচ্চারা স্কুল মাদ্রাসায় যেতে পারে না। আর মানুষ তাদের কর্মস্থলে যেতে পারে না।মরার উপর খাড়ার গায়ের মত আরেকটি বিষয় শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠার কারণে শিল্প কলকারখানার বজ্র এখানে প্রতিনিয়ত পানির সাথে মিশে যায়। পানি দূষিত হয়ে এলাকার মানুষের জনসাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুরা ছোটবেলা থেকে কেউ কেউ এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে যে ভবিষ্যৎ তাদের জন্য অন্ধকার এই সময় আমরা বারবার প্রশাসকের কাছে দাবি করে আসছি যে এই জলাবদ্ধতা নিরসন করে আমাদের জনগণকে এই দুর্দশা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। কিন্তু এখনো তা করা হচ্ছে না। সেই কারণে আজকে আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা জনগণের জন্য আমরা দেশের জন্য রাজনীতি করি। এই সময় আমরা নিশ্চুপ বসে থাকতে পারিনা। বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো এখন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে মনে করি।
তার কারনে ফতুল্লা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা এখন রাজপথে আন্দোলনে নামবো। জনগণের দাবিদাওয়া যতক্ষণ পর্যন্ত না বাস্তবায়িত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলনে আমরা অংশগ্রহণ করব। আমরা বানবাসি মানুষের পাশে আছি। তাদের দুঃখ দুর্দশার পাশে আমরা থাকতে চাই। আমরা সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাতে চাই আপনারা আসুন দেখে যান ডিএনডির মানুষ কত নিদারুণ কষ্টের মধ্যে এখন জনাবদ্ধতার কারণে দিন যাপন করছেন । কি কি সমস্যার মধ্যে আছে।
তিনি আরো বলেন, ডিএনডির ভিতরে অসংখ্য শিল্প কলকারখানা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই ডিএনডির এলাকার মানুষ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই ন্যায় সঙ্গত দাবি যে করেই হোক এই জলাবদ্ধতা নিরেশন করতে হবে। আর এর জন্য আমরা দাবি করি যারা এতদিন বলছে বানভাসি মানুষের জন্য সরকার থেকে যারা কোটি কোটি টাকা অর্থ এনেছে সেই অর্থ কোথায় গেল। প্রশাসনের কাছে দাবি এগুলা তদন্ত করে যারা এই অর্থ লুটপাট করে খেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। এখানে যারা ইউনিয়ন পরিষদে ছিল সরকার থেকে টাকা নিয়েছে, ট্যাক্সের পয়সা তুলেছে সেই টাকা দিয়ে কি করেছে সেগুলোও তদন্ত করে দেখা হোক। এই ১৬ বছর কিভাবে তারা লুটপাট করে খেয়েছে যারা এই লুটপাটের সাথে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।