ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রাম্পের ‘যৌন কেলেঙ্কারি’ নিয়ে মাস্কের বিস্ফোরক পোস্ট মুছে গেল ৪৮ ঘণ্টায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুন ০৮, ২০২৫, ১২:৫২ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের নথিতে রয়েছে-সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তবে ৪৮ ঘণ্টা পার হতে না হতেই সেই পোস্টটি মুছে ফেলেছেন তিনি। ঘটনাটি ঘিরে এখনো সরগরম সামাজিক মাধ্যম, আর নতুন করে প্রশ্ন উঠছে: ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্ক কি আরও জটিল হয়ে উঠল, নাকি কোনো গোপন সমঝোতা হয়েছে?

গত বৃহস্পতিবার এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে মাস্ক দাবি করেন, এপস্টিনের ‘ব্ল্যাক বুক’ তথা গোপন নথিতে ট্রাম্পের নাম রয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি অভিযোগ তোলেন, ট্রাম্পের নাম থাকা এবং তার রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই ফাইলটি প্রকাশ্যে আনা হয়নি।

মাস্ক বলেন, “এটা ভবিষ্যতের জন্য মনে রাখুন- সত্যি একদিন না একদিন সামনে আসবেই।” তার এই মন্তব্যে হুমকির সুর ছিল, যেন আরও বড় তথ্য ফাঁসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি।

শনিবার দুপুর নাগাদ সেই আলোচিত পোস্টটি মুছে ফেলেন মাস্ক। ঠিক কী কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন, সে বিষয়ে সরাসরি কিছু জানাননি। তবে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, কোনো রাজনৈতিক চাপে বা কৌশলগত কারণে তিনি পোস্টটি ডিলিট করেছেন।

জেফ্রি এপস্টিনের বিরুদ্ধে কিশোরী পাচার ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ বহুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভার্জিনিয়া জিফরে নামের এক নারী এপস্টিন ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলে প্রকাশ্যে আসে বেশ কিছু নথি, যেগুলোতে দাবি করা হয়- বিশ্বের নামজাদা ব্যক্তিদের অনেকেই এপস্টিনের যৌনচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

কানাঘুষো অনুযায়ী, এই তালিকায় ট্রাম্প ছাড়াও রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন, বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং, সংগীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসনের মতো অনেক নাম। আলোচিত হয়ে ওঠে এপস্টিনের ব্যক্তিগত বিমান ‘লোলিটা এক্সপ্রেস’, যেটিতে চড়ে একাধিকবার বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন এসব হাই-প্রোফাইল অতিথিরা।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মাস্ককে শোনা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ইমপিচ’ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে স্থলাভিষিক্ত করার প্রস্তাব দিতে। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, “আমি ইলনের ওপর খুব হতাশ। আমাদের আর আগের মতো দারুণ সম্পর্ক থাকবে কি না, তা এখন বলা যাচ্ছে না।”

এর আগে ট্রাম্প এবং মাস্কের মধ্যে একধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও, সাম্প্রতিক পোস্ট এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- তাদের মধ্যে সম্পর্ক এখন অনেকটাই শীতল।

মাস্কের পোস্ট মুছে ফেলার ঘটনা ঘিরে জল্পনার শেষ নেই। অনেকেই মনে করছেন, এর পেছনে থাকতে পারে আইনি পরামর্শ, রাজনৈতিক চাপ বা ব্যক্তিগত সমঝোতা। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটা হতে পারে বড় ধরনের ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ কৌশলের অংশ।

তবে যা-ই হোক, দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির এই ঠান্ডা লড়াই যে ভবিষ্যতে আরও নাটকীয় মোড় নিতে পারে—তা এখনই বলে দেওয়া যায়।


বাংলাধারা/এসআর