ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা: হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড

মাগুরা প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ১১:৫৩ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

মাত্র ৮ বছরের নিষ্পাপ শিশু আছিয়া। পরিবারের সাথে বেড়াতে গিয়েছিল বড় বোনের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা- যা নাড়িয়ে দেয় পুরো দেশকে। সেই নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে আদালতের রায়ে প্রধান আসামি হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) সকালে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার অন্যান্য আসামি- হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগম, ছেলে সজীব শেখ এবং রাতুল শেখ- তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত বিশেষ কৌঁসুলি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।

আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৩ এপ্রিল, অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে। মাত্র ২১ কার্যদিবসে শেষ হয় পুরো বিচারিক প্রক্রিয়া। এর আগে ১৩ এপ্রিল পুলিশ মামলার চার্জশিট দেয় এবং ২৭ এপ্রিল শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, ফরেনসিক মেডিকেল রিপোর্ট এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যে হিটু শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বিকৃত মানসিকতার শিকার হয় শিশু আছিয়া। ঘটনার দিন দুপুরে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ফরিদপুর মেডিকেল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সর্বশেষ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ছোট্ট আছিয়ার।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় দেশব্যাপী মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম ও নাগরিক সমাজে উঠে আসে বিচারের দাবিতে একস্বর প্রতিক্রিয়া।

ঘটনার পর ৮ মার্চ আছিয়ার মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। পরবর্তীতে ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে হিটু শেখ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

৬ মার্চের ঘটনার মাত্র ৭৩ দিনের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। দ্রুত তদন্ত, বিচারিক তৎপরতা এবং রাষ্ট্রের আইনি উদ্যোগে একটি চাঞ্চল্যকর মামলার নিষ্পত্তি হলো।


বাংলাধারা/এসআর