মুজিবনগর সীমান্তে ফের বিএসএফের পুশইন: দুই দিনে ৩০ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠানো হলো
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ০৬:১৬ বিকাল

ছবি: প্রতিনিধি
মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ফের ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার ভোররাতে মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়া হয়। এ নিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে ওই সীমান্ত দিয়ে মোট ৪৯ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করা হলো।
বিএসএফের পুশইন করা এসব নারী, পুরুষ ও শিশুকে মুজিবনগর থানা পুলিশ কেদারগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন।
আটকদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৮ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও রৌমারী উপজেলার বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- নাগেশ্বরী উপজেলার টগরপাড়া গ্রামের মো. বজলুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৪) এবং সন্তানরা; ফুলবাড়ী উপজেলার নগরাজপুর, ধর্মপুর, অজয়টারি ও কাশিয়াবাড়ী গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৭ মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে ৫০ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কও রয়েছেন।
আটককৃতদের ভাষ্য অনুযায়ী, জীবিকার সন্ধানে বিভিন্ন সময়ে তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে এবং দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিএসএফ তাদের আটক করে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেদারগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিজিবির দায়ের করা মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল আহসান বলেন, “বিএসএফ যাদের পুশইন করেছে, তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে তারা ভারতে বসবাস করছিলেন বলে জানা গেছে। বিএসএফ তাদের আমাদের সীমান্তে পাঠিয়ে দিলে আমরা পুলিশে হস্তান্তর করি এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”
এর আগে গত রোববার ভোররাতে একই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৯ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছিল বিএসএফ।
সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের পুশইন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা ও দুই দেশের অভিবাসন ইস্যুতে যৌথ উদ্যোগ না থাকলে এমন ঘটনা আরও বাড়বে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাধারা/এসআর