ঢাকা, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায়ের শপথ নিলেন নাহিদ ইসলাম

রাজশাহী প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: জুলাই ০৬, ২০২৫, ১১:৪০ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

“বন্ধুগণ, আপনারা প্রস্তুত থাকুন। আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে দেখা হবে। আমরা জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করেই ছাড়ব, ইনশাল্লাহ।”

এভাবেই আন্দোলনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রোববার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে অনুষ্ঠিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র ষষ্ঠ দিনে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এনসিপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে গোরহাঙ্গা রেলগেট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নিউ মার্কেট হয়ে সাহেববাজারে এসে শেষ হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার বিচার আমরা দেখতে চাই। আমরা সংস্কার চাই, চাই নতুন সংবিধান। এই প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান উপহার দেবে, যা দেশের মানুষের অধিকার ও ইনসাফ নিশ্চিত করবে। স্বৈরতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নাহিদ বলেন, “অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। আমার ভাই আবু সাইদ পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল, রাজশাহীর অনেক ভাই শহিদ হয়েছেন। আমাদের স্বপ্ন কেবল শেখ হাসিনার পতন নয়, আমাদের স্বপ্ন ছিল সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে নানা ষড়যন্ত্রে সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।”

তিনি স্বীকার করেন, “আমাদেরও ভুল ছিল, সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু এবার সেই ভুল আর করব না। যারা এই গণঅভ্যুত্থান ও সংস্কারের যাত্রাকে ব্যাহত করতে চাইছে, তাদের জনগণ ক্ষমা করবে না।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট ২০২৪-এ আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন। এবার আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের পুনর্গঠন। তখন আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার আমাদের লক্ষ্য জাতীয় সংসদ ভবন। গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদকেও জয় করব ইনশাল্লাহ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণদের অভূতপূর্ণ বিজয় হবে।”

রাজশাহীর ঐতিহ্য স্মরণ করে নাহিদ বলেন, “রাজশাহী জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির নগরী। মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী এই শহর থেকেই ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেছিলেন। আমরা ঘোষণা করছি- যদি আমাদের নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না মিলে, সীমান্ত রক্ষা না হয়, তাহলে আমরা আবারও রাজশাহী থেকে লংমার্চ শুরু করব।”

রাজশাহীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই জেলা ও নগরকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। রাজশাহীর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই। এখানে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। উন্নয়ন শুধু ঢাকায় সীমিত রাখা যাবে না, বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের জন্যই আমাদের সংস্কার এবং নতুন দেশ গড়ার আন্দোলন।”

তিনি বলেন, “জুলাই পদযাত্রার বার্তা হচ্ছে- একটি নতুন বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বার্তা।”

 

বাংলাধারা/এসআর