ঢাকা, রবিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ০৩, ২০২৫, ১২:০২ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রোববার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যও উপস্থাপন করা হবে। ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে বিচারকাজ সরাসরি সম্প্রচার করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই প্রথমবারের মতো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। শনিবার (২ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্য দুই আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। মামুন ইতোমধ্যে ‘রাজসাক্ষী’ হিসেবে আদালতে আবেদন করেন এবং ট্রাইব্যুনাল তার আবেদন মঞ্জুর করে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও কামাল পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন দায়িত্ব পালন করবেন। মামুনের পক্ষের আইনজীবী হিসেবে আছেন অ্যাডভোকেট জায়েদ বিন আমজাদ।

গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আনুষ্ঠানিকভাবে এই তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। এরপর ৩ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য এবং ৪ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। মামলায় ৮১ জন সাক্ষী রয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ও একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকও।

২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাসের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ জমা পড়ে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—গণহত্যায় উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশনা, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’, এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’-এ অংশগ্রহণ।

এছাড়া, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ সংক্রান্ত অডিও রেকর্ডসহ বিভিন্ন সাক্ষ্যপ্রমাণ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১২ মে তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয়। এরপর ১ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেয় এবং পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

আসামিদের মধ্যে হাজির না থাকায় শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু হচ্ছে রোববার।

বাংলাধারা/এসআর