ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

বিমান বাংলাদেশের রেকর্ড মুনাফা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আয় ৯৩৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৪:৫৩ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

রাষ্ট্রায়ত্ত পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে। বিদায়ী অর্থবছরে বিমানের অনিরীক্ষিত মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩৭ কোটি টাকা, যা সংস্থার ৫৫ বছরের ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিমান ৪৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল, যা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এবারের সাফল্যের জন্য যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, যাত্রীদের আস্থা ও সমর্থনই এ অর্জনের প্রধান শক্তি। একই সঙ্গে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নও মুনাফা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

১৯৭২ সালে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বিমান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের সীমিত সম্পদ ও অবকাঠামোর মধ্যে শুরু হলেও ধীরে ধীরে আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক এয়ারলাইন্সে পরিণত হয়েছে সংস্থাটি। দীর্ঘ ৫৫ বছরে মোট ২৬ বছর লাভজনক ছিল বিমান। ২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে মোট পুঞ্জীভূত মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের আয় দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। এর আগের বছর প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটির বেশি আয় করেছিল সংস্থাটি। বর্তমানে বিমানের বহরে রয়েছে ২১টি উড়োজাহাজ, যার মধ্যে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন। বহরের মধ্যে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারও রয়েছে। বিমান নিজস্ব রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতার কারণে বিপুল ব্যয় সাশ্রয় করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশেই লাইন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে বড় ধরনের চেক পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়, যা এ খাতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।

গত অর্থবছরে বিমান পরিবহন করেছে ৩৪ লাখ যাত্রী এবং ৪৩ হাজার ৯১৮ টন কার্গো। কেবিন ফ্যাক্টর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ শতাংশে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি। এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে সংস্থার ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ডও তৈরি হয়েছে।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ. বি. এম. রওশন কবীর জানিয়েছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিশ্চিত করে বিমান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় ডিজিটাল রূপান্তর এবং কার্গো সেবা আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাধারা/এসআর