আমাদের স্বার্থ যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি : প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৬:৫৭ বিকাল

ছবি: সংগৃহিত
শুল্ক ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়। তার ভাষায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ একে অপরের কাছাকাছি, আর এ কারণেই আলোচনার প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের একটি বড় মাইলফলক।
তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসা মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উপায়, জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলপিজি ও কৃষিপণ্য আমদানি, সিভিল এয়ারক্রাফট কেনা, মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের মতো বিষয়গুলো স্থান পায়। ইউনূস জানান, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত, যা আরও শুল্কছাড়ের সুযোগ তৈরি করবে এবং টেকসই ও পারস্পরিক উপকারী অংশীদারি গড়ে তুলবে। তিনি চলমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির খসড়ায় দ্রুত স্বাক্ষরের আশা প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ১১ দফা শ্রম কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাজ করছে, যাতে শ্রমমান ও ন্যায্য চর্চা রক্ষার অঙ্গীকার স্পষ্ট হয়। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ এবং স্বল্প সুদে ঋণ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে। বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের কথাও তিনি প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চ বাংলাদেশের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি একতরফাভাবে কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা আলোচনাকে সহজ করেছে এবং ইতিবাচক ফল এনেছে। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আলোচক দল অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে এবং কঠোর পরিশ্রম করেছে। তিনি শুল্কসংক্রান্ত চুক্তি ও আমদানি প্রতিশ্রুতির সময়মতো বাস্তবায়নের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুরশেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন এবং ইউএসটিআর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এমিলি অ্যাশবি।
বাংলাধারা/এসআর