তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আপিল শুনানি শুরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দায়ের করা চূড়ান্ত আপিলের শুনানি চলছে আপিল বিভাগে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।

আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ।

এর ধারাবাহিকতায় ড. বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান, এই পাঁচজন আপিল করেন। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও পৃথকভাবে আপিল দায়ের করেন।

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে ১৯৯৮ সালে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।

২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এ রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করেন।

এই রায়ের পর একই বছরের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়।

তবে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। একই বিষয়ে পৃথকভাবে আবেদন করেন বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারাও।

এ ছাড়া গত বছর নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

বর্তমানে এসব আপিল একত্রে শুনানি করছে আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে আদালতের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করবে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের সাংবিধানিক সম্ভাবনা।

বাংলাধারা/এসআর