হুতিদের ‘আকাশ অবরোধের’ হুমকি, পাল্টা হুঁশিয়ারিতে ক্ষুব্ধ নেতানিয়াহু
প্রকাশিত: মে ০৫, ২০২৫, ১১:৪৬ দুপুর

ফাইল ছবি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণ আকাশ অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী (আনসারুল্লাহ)। এরই মধ্যে তারা তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যা ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার চোখ এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুতিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সামরিক অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রোববার এক বিবৃতিতে হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, ইসরায়েল গাজায় আগ্রাসন জোরদার করায় তাদের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলো বিশেষ করে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে। তিনি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ইসরায়েলগামী সব ফ্লাইট বাতিল করে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
সারি বলেন, "ইসরায়েলের বিমান চলাচল সম্পূর্ণভাবে থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে। যদি গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ না হয়, তাহলে আমাদের প্রতিরোধ আরও তীব্র হবে।"
এই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কাছাকাছি হুতিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করতে ইসরায়েলের ‘হেৎজ’ ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়, ফলে কিছু সময়ের জন্য বিমান চলাচল ব্যাহত হয়।
এ পরিস্থিতিতে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানান, "আমরা আগেও হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি, এবারও চালাব। এটা একবারের প্রতিক্রিয়া নয়- আমরা বারবার আঘাত করব, যতক্ষণ না হুমকি নির্মূল হয়।"
নেতানিয়াহু হুতি গোষ্ঠীর পেছনে ইরানের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন, "এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইরান। প্রয়োজনে ইরানকেও উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।"
এই টানটান উত্তেজনার মধ্যেই রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের রাজধানী সানা-সংলগ্ন অঞ্চল আল-সাওয়াদ, হোদেইদাহর রাস ইসা বন্দর ও কামারান দ্বীপে একাধিক বিমান হামলা চালায়। হুতি-ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম আল-মাসিরাহ জানিয়েছে, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর মেলেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় চলমান সংঘাত ইসরায়েলকে এখন কেবল হামাস নয়, আরও বিস্তৃত ফ্রন্টে লড়াই করতে বাধ্য করছে- যার মধ্যে হুতি গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ দেওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
বাংলাধারা/এসআর