ফিলিস্তিনি ও সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫, ১১:০৫ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীসহ সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া দেশগুলো হলো-বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, সিয়েরা লিওন, লাওস এবং সিরিয়া।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় ও জননিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় স্ক্রিনিং, যাচাই-বাছাই এবং তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ‘স্থায়ী ও গুরুতর ঘাটতি’ থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
হোয়াইট হাউস জানায়, আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
এর আগেও অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আফগানিস্তান, মিয়ানমার, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেনসহ মোট ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনসংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম এক সাক্ষাৎকারে জানান, এই তালিকা আরও সম্প্রসারণ করে অন্তত ৩২টি দেশে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন, যদিও তখন অতিরিক্ত দেশগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুক হামলায় ১৫ জন ইহুদি নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবস্থান নিতে পারে, এমন আশঙ্কা আগেই তৈরি হয়েছিল। সেই প্রেক্ষাপটেই ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে খুব একটা অপ্রত্যাশিত বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।
তবে সিরিয়ার নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। কারণ অল্পদিন আগেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ শারা হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। সফরের আগে শারার বিরুদ্ধে থাকা মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হওয়ার ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওই হামলাকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে ট্রাম্প প্রতিক্রিয়ায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে সিরিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়, দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে চাইলেও দেশটিতে পাসপোর্ট ও নাগরিক নথিপত্র ইস্যু করার জন্য কার্যকর ও শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি যথাযথ স্ক্রিনিং ও যাচাই-বাছাই ব্যবস্থাও সেখানে অনুপস্থিত, যা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক ও উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বাংলাধারা/এসআর
