সড়কে পরিবহন সংকট, ঘরমুখো মানুষ চরম ভোগান্তিতে
প্রকাশিত: জুন ০৫, ২০২৫, ১২:৪৮ রাত
ছবি: বাংলাধারা
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছে মানুষ- প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। তবে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়া থেকে ঘরে ফেরার এই যাত্রা আনন্দের বদলে রূপ নিয়েছে দুর্ভোগে।
বুধবার (৪ জুন) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা এবং নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল দেখা যায়। কিন্তু গাড়ির সংকটে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করেও মিলছে না কোনো পরিবহন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার, হেমায়েতপুর, উল্লাইল, গেন্ডা, পাকিজার মোড়, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডসহ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, শ্রীপুর ও জিরানী এলাকায় ঘরমুখো মানুষের দীর্ঘ সারি চোখে পড়েছে।
পাকিজার মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রফিক মিয়া। তিনি জানান, “আমি যশোর যাব, কিন্তু আগেভাগে টিকিট কাটতে পারিনি। এখন এক ঘণ্টা পঁচিশ মিনিট দাঁড়িয়ে আছি, কোনো বাস নেই!”
শামীমা নামের এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, “বিকেল ৫টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি, এখন রাত ৭টা। বাস আসে কিন্তু সিট থাকে না। গাবতলী থেকে যাত্রী ভর্তি হয়ে আসে গাড়িগুলো, এখানে থামেও না। একটানা দাঁড়িয়ে আছি, যেন কবে একটা বাস থামে।”
নবীনগরে দাঁড়িয়ে ছিলেন পোশাকশ্রমিক রাবেয়া আক্তার। গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কারখানা থেকে আগেভাগে বের হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস না পেয়ে হতাশ রাবেয়া বলেন, “প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো গাড়ি দাঁড়ায় না। দাঁড়ালেও অতিরিক্ত ভাড়া চায়। সিট না থাকলেও টাকা চেয়ে বসে।”
রাজধানী পরিবহনের চালক সবুজ জানান, “বিকেল থেকে হঠাৎ করেই যাত্রীর চাপ বেড়েছে। বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় সবাইকে নিতে পারছি না।”
এদিকে সাভার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ সালেহ আহমেদ দৈনিক বাংলাধারাকে জানান, “সড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ একসঙ্গে বেড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।”
ঘরমুখো মানুষের এই দুর্ভোগের পেছনে রয়েছে পরিবহনের অপ্রতুলতা, অগ্রিম টিকিট না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া এবং বাসে যাত্রী ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তোলা। ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত বাস সার্ভিস চালু এবং স্ট্যান্ডে পরিবহন তদারকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ঘরে ফেরার এই যাত্রা যাতে দুর্ভোগের না হয়ে আনন্দের হয়- এমন ব্যবস্থাই এখন সবার প্রত্যাশা।
বাংলাধারা/এসআর
