ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

১৫-১৬ বছরে ২০ হাজার তরুণের প্রাণ নিয়েছে ফ্যাসিস্টরা : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ১১:০১ রাত  

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার সারা দেশে দুই হাজারের বেশি তরুণের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সামগ্রিকভাবে গত ১৫-১৬ বছরে প্রায় ২০ হাজার তরুণের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এরা। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে তোমরা (তরুণরা) জেগে উঠেছো।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র কনভেনশনে এসব কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে আমরা ঠিকমতো মূল্যায়ন করি না। আমি খুব আশঙ্কায় ছিলাম, এই মহীয়সী নেত্রী কি আবার দেখে যেতে পারবেন, তার দেশে আবার মুক্ত হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি দেখে যেতে পারছেন দেশ আবার মুক্ত হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ছাত্ররা সর্বপ্রথম এগিয়ে এসেছে কিন্তু এ আন্দোলনে কতজন রিকশা শ্রমিক প্রাণ দিয়েছে, আমরা তার সঠিক হিসাব রাখি না। আমি পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম অসুস্থ ছাত্রদের দেখতে। সেখানে গিয়ে দেখেছি প্রায় ৪০ ভাগ শ্রমিক, যারা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করেন এবং রিকশা চালান। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানো প্রয়োজন। এ কথাগুলো এজন্য বলছি যে এবার লড়াইটা মাটি থেকে দাঁড়িয়ে করেছে। গুলি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেছে কিন্তু ভয় পেয়ে পেছনে হাঁটেনি, এখানে বিজয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে যখনই আমরা বুক পেতে দিয়েছি, রক্ত ঝরিয়েছি, তখনই আমাদের বিজয় এসেছে।

 

আমি বারবার বলি, ছাত্ররা হচ্ছে আমাদের সেই ভ্যানগার্ড, যারা পরিবর্তন এনে দিয়েছে– উল্লেখ করেন তিনি।

কোনো ষড়যন্ত্রে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অর্জন বৃথা যেতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তোমাদের প্রতি একটাই অনুরোধ যে আমরা যেটা অর্জন করেছি সেটা যেন বৃথা না যায়। সীমান্তের ওপারে ফ্যাসিস্ট বসে আছে… ওখান থেকে নতুন নতুন চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে তারা এক একটা ঘটনা ঘটিয়ে সেখানে ফলাও করে বিশ্বকে দেখাতে চায় যে বাংলাদেশ নাকি মৌলবাদীর দেশ হয়ে গেছে, বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘু ভাইকে নির্যাতন করা হচ্ছে।

ভারতের পত্র-পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনভাবে লেখা হচ্ছে যেন বাংলাদেশে এখন এই ধরনের সমস্ত নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটছে– উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসলে তা না। কারা এগুলো করছে? কেন করছে? আমি এ কথাটা এজন্য বলছি যে এ আনন্দে আমাদের থাকার অবকাশ নাই যে, আমরা জিতে গেছি… সব হয়ে গেছে। আমাদের মাথার ওপরে সেই খড়গ এখনো আছে এবং চারদিক থেকে তারা চেষ্টা করছে আবার অন্ধকারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এজন্য খুব সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনোরকম হঠকারিতা, কোনোরকম বিশৃঙ্খলা যাতে কেউ করতে না পারে। সেটাকে রুখে দিতে হবে, এটা হচ্ছে একটা বড় কাজ।

সংগঠনের সমন্বয়ক মিলন মাহমুদের সভাপতিত্বে কনভেনশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শরিফ উদ্দিন আহমেদ, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হোসেন শাহরিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমির হোসেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এরফান আলী, অধ্যাপক এসএম মাহবুবুর রহমান, তেজগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যাপক সোলায়মান আলী, বিএনপি পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সাংসদ জেড মর্তুজা চৌধুরী তুলা, ঠাকুরগাঁও বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল, যুবদলের কামাল আনোয়ার আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।