ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

সজাগ থাকতে হবে, গণতন্ত্রের উত্তরণ এখনো হয়নি : মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১১:১৩ রাত  

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, খুব সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের উত্তরণ এখনো হয়নি।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমান স্মরণে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকার বা পার্লামেন্ট এখনো আসেনি। সে জন্য অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে সচেতনতার জন্য কাজ করতে হবে। দলকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সময়টা আমাদের পরীক্ষার সময়। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন টক শো— সবকিছু দেখেন, কেমন একটা অস্থিরতা চলছে দেশে।
ফখরুল বলেন, কতগুলো নির্ধারিত বিষয়গুলোকে আমরা অনির্ধারিত করে ফেলছি। অনিশ্চিত করে ফেলছি। সংস্কার, নির্বাচন— এই কথাগুলো এখন অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর দায়িত্ব হবে অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশনে বিএনপির প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা সমাধান বেরিয়ে আসবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের প্রতিনিধি পাবে।
অনুষ্ঠানে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, জাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে। কারা হত্যা করেছে, জানা যায়নি। তবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, যারা এই সময়ে একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের এই পরিবর্তনের, আন্দোলনের সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত ছিল না। তারা দেশে একটা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়। তারা দেশের পক্ষের মানুষ নয়, গণতন্ত্রের পক্ষের নয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও শ্রমজীবী মানুষের সংস্কারের কোনো কথা শুনতে না পারায় হতাশা ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, কৃষক তার পণ্যে ন্যায্যমূল্য পান না। ঠিক যখন প্রয়োজন, তখন পানি পায় না। তাদের সমস্যার সমাধান হয় না। সন্তানেরা (শ্রমিকদের) ভালো স্কুলে যেতে পারে না। এমনকি স্কুলে গেলেও বই পায় না। সেই কথাগুলো আলোচনা হয় না।
তিনি বলেন, টেলিভিশন, টক শো, এমনকি টেলিভিশনের নাটকেও সাধারণ মানুষ অনুপস্থিত। শ্রমজীবী মানুষ অনুপস্থিত।
আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সময়ে তাকে বেশি দরকার ছিল। একটা সন্ধিক্ষণে চলছে, একটি অনিশ্চিত অবস্থা যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী, হাসিনাবিরোধী বিস্ফোরণ হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী হাসিনা পালিয়েছেন। একটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই পরিবর্তনের সময়গুলো সবচেয়ে জরুরি সময়। এখন জনমতকে সঠিক পথে প্রবাহিত করা, জনগণকে সঠিক দিকে নিয়ে যাওয়া, এই কাজটা অত্যন্ত জরুরি।
আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে বিএনপির এই নেতা বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন সেই জাতের মানুষ, যিনি প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়েও আন্দোলন তৈরি করতেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান প্রমুখ।