ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান বাংলাদেশের
প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৫, ০৫:০৬ বিকাল

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা ঘিরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে শান্ত ও সংযত আচরণ প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ উভয় দেশকে শান্ত থাকার, সংযত থাকার এবং এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান জানায় যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।”
বাংলাদেশ সরকার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে, আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার স্বার্থে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এবং শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত পরিচালনা করে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, এ অভিযানে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে নিখুঁত হামলা চালানো হয়েছে।
ভারত সরকার জানায়, এই হামলাগুলো ছিল ‘নির্ভুল, পরিমিত এবং অ-উত্তেজনামূলক’। তারা জোর দিয়ে বলেছে, হামলার লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র সন্ত্রাসী ঘাঁটি, কোনো পাকিস্তানি সেনা স্থাপনাকে নয়।
ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ নেয়। দেশটির বিমান বাহিনী জানায়, একযোগে পরিচালিত হামলায় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন এবং একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে, দুই দেশের এই সামরিক পাল্টাপাল্টির প্রভাব পড়ে সীমান্ত এলাকাতেও। মঙ্গলবার রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি) বরাবর গোলাগুলি ও মর্টার হামলার খবর পাওয়া গেছে। রয়টার্স পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে, সীমান্তে উভয়পক্ষের সেনাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যেও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের উত্তেজনা শুধু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা ডেকে আনে।
বাংলাদেশ সরকার বলেছে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের পথই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান। আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে ঢাকা।
বাংলাধারা/এসআর