তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ড. ইউনূসের
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০১:৪৭ দুপুর

ছবি: পিআইডি
তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি, এ ধরনের ব্যাংক পরিচালনায় একটি স্বতন্ত্র আইন ‘মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি আইন’ প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটির (এমআরএ) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “এই প্রস্তাবিত ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক প্রচলিত কোনো ব্যাংক নয়। এটি হবে বিশ্বাস ও আস্থাভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে জামানতের প্রয়োজন হবে না। এর মূল উদ্দেশ্য হবে সামাজিক ব্যবসার প্রসার এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা প্রদান।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই মানুষ উদ্যোক্তা হয়ে উঠুক। মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। ব্যাংক এই উদ্যোগকে কেবল সহায়তা করবে অর্থের জোগান দিয়ে, আর তরুণ প্রজন্ম নিজের বুদ্ধি ও উদ্যম কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলবে নতুন উদ্যোগ।”
ক্ষুদ্রঋণের বাস্তব সাফল্যের উদাহরণ টেনে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারীরা কখনো ঋণ নিয়ে পালায়নি। বরং সময়মতো তা পরিশোধ করেছেন। অন্যদিকে বড় বড় প্রচলিত ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা নিয়ে অনেকেই উধাও হয়ে গেছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, আসল ব্যাংক কে- যার ওপর জনগণ বিশ্বাস রাখতে পারে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের এখন সময় এসেছে প্রকৃত অর্থে জনগণভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দেওয়ার।”
মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটির (এমআরএ) কার্যক্রমের প্রশংসা করে ড. ইউনূস বলেন, “এমআরএ শুধু বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতকেই নয়, বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ নীতিনির্ধারণে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক।
বক্তারা বলেন, ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও কার্যকর করতে হলে সময়োপযোগী আইন ও নীতির দরকার রয়েছে। একই সঙ্গে তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে উদারতা ও মানবিকতা জরুরি।
বাংলাধারা/এসআর