ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি বিভ্রান্তিকর ও অস্পষ্ট: বিএনপি

বিশেষ প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ০৬:২০ বিকাল  

ছবি: বাংলাধারা

উপদেষ্টা পরিষদের সাম্প্রতিক বিবৃতিকে ‘অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি বলেছে, এটি সরকারের পক্ষ থেকে দায় এড়ানোর একটি প্রচেষ্টা। দলটি মনে করে, এমন বক্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা বাড়াবে।

মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “সরকার পরিচালনায় নিরপেক্ষতা ও দক্ষতার অভাব থেকেই নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। জনগণের সঙ্গে সত্যিকারের সংলাপ না করে সরকার এখন পরাজিত শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের গল্প তুলে ধরে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে।”

উল্লেখ্য, গত ২৪ মে উপদেষ্টা পরিষদের এক অনির্ধারিত বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, “পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকে যদি অসম্ভব করে তোলা হয়, তবে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ড. মোশাররফ বলেন, “আমরা উপদেষ্টা পরিষদকে শুরু থেকেই সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে আসছি। কিন্তু এখন পরিষদ নিজেই রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য দিয়ে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা থাকলে তা খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য, কিন্তু আবছা অভিযোগ তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা কোনো দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নয়।”

তিনি আরও বলেন, “পরাজিত শক্তি কিংবা বিদেশি ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হলে একমাত্র পথ হলো একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। এ জন্য একটি সময়সীমাবদ্ধ, সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দরকার। অন্যথায় সংকট আরও গভীর হবে।”

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “দেশে স্থিতিশীলতা আনতে, গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে এবং নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে আমরা সরকারকে সর্বদা সহযোগিতা করেছি। জুলাইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান আমাদের গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতিফলন, সেই আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।”

সংবাদ সম্মেলনে ‘বিতর্কিত উপদেষ্টা’দের অপসারণ নিয়েও বক্তব্য দেন ড. মোশাররফ। তিনি বলেন, “ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক জাগরণ শুরু হয়েছে, তা যেন কোনো বিভাজনের শিকার না হয়—এটি নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি। আর এজন্য সরকারের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছে, তার স্থায়ী ভিত্তি গড়তে হলে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও হতে হবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সরকারের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ জনমনে সন্দেহ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরও যেসব সদস্য উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন—মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান।

 

বাংলাধারা/এসআর