জুলাইয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্য, শুরু হলো রাজনৈতিক সংলাপ
প্রকাশিত: জুন ০৩, ২০২৫, ০১:২৭ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ন্যূনতম ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, "আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো- কোন কোন বিষয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল অন্তত একটি ন্যূনতম পর্যায়ের ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে তা চিহ্নিত করা এবং তা লিখিত সনদ আকারে প্রকাশ করা।"
তিনি বলেন, "সব বিষয়ে হয়তো একমত হওয়া সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজ নিজ অবস্থান, ইশতেহার ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বজায় রাখবে। তবে যেকোনো দল যদি অতিরিক্ত প্রস্তাব দিতে চায়, সেই মতামতও স্থান পাবে আলোচনায়।"
আলী রীয়াজ জানান, “আমরা চাচ্ছি সম্মিলিত সংলাপের মধ্য দিয়ে যুক্তিপূর্ণ বিশ্লেষণ হোক এবং তাতে অবস্থানের ন্যূনতম সমন্বয় ঘটুক। আলাদাভাবে একেক দলের সঙ্গে না বসে আমরা সম্মিলিত আলোচনা বেছে নিয়েছি, যাতে মেলবন্ধনের সুযোগ তৈরি হয়। এভাবেই আমরা একটি কাঠামো দাঁড় করাতে চাই।”
তিনি বলেন, "সমস্ত বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না হলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উপসংহারে পৌঁছানো জরুরি-বিশেষ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করতে। আমাদের লক্ষ্য হলো জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদের খসড়া প্রস্তুত করা।"
আলোচনার কাঠামো প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ আরও জানান, “যে সব প্রস্তাবে ঐকমত্য আসবে, সেগুলোই জাতীয় সনদের অংশ হবে। আর যেগুলোর ক্ষেত্রে মতানৈক্য থাকবে, সেগুলোকে ‘আলোচিত হলেও ঐকমত্য অর্জিত হয়নি’- এইভাবে উল্লেখ করা হবে।”
সংলাপে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ছিল:
- সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ
- সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের কাঠামো
- স্থায়ী সংসদীয় কমিটির কার্যকারিতা
- সরকারের মেয়াদ
- এসব ব্যবস্থাকে কার্যকর করার কৌশল
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই সংলাপ ভবিষ্যতের রাজনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যাশা করেন, আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সর্বজনীন ন্যূনতম রূপরেখা তৈরি হবে, যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
বাংলাধারা/এসআর