শ্রমশক্তি রপ্তানির পথে সবচেয়ে বড় বাধা দালালচক্র: প্রধান উপদেষ্টা
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:১৩ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দালালচক্রকে চিহ্নিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি দালালদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক বাংলাদেশি শ্রমিকদের মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, কঠিন পরিস্থিতি জেনেও দেশের স্বার্থে তারা আইন ভঙ্গ করেছিলেন। পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মানবিক বিবেচনায় শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “শ্রমশক্তি রপ্তানির পুরো ব্যবস্থাই দালালবেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার কারণে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এই খাতকে দালালমুক্ত করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “বিশ্বজুড়ে তারুণ্যের ঘাটতি রয়েছে, আর আমরা তারুণ্যের খনি। এই সম্পদ সোনার চেয়েও মূল্যবান। এত বিপুল তরুণ জনশক্তি বিশ্বের আর কোথাও নেই।”
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরে এলে জানা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১৭ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, যদিও তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন। এ বিষয়ে অনুরোধ জানালে মালয়েশিয়া শ্রমিক নিতে সম্মত হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো প্রক্রিয়াটি দালাল ও সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এবং সরকার কার্যত এই প্রক্রিয়া থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে।
জাপান সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাপান জানিয়েছে তাদের শ্রমিক দরকার। আমি জানতে চেয়েছি তারা বাংলাদেশ থেকে কত শ্রমিক নিয়েছে, জানাল মাত্র দুই হাজার, অথচ নেপাল থেকে নিয়েছে সাত হাজার। বিষয়টি আমাকে বিস্মিত করেছে। আমি বলেছি, ভাষা প্রশিক্ষণ দিলে বাংলাদেশ এক লাখ শ্রমিক দিতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, জাপানের বহু শহরে ট্যাক্সি বন্ধ, চালক নেই, মাইলের পর মাইল জমি পড়ে আছে জনশূন্য অবস্থায়। “ওরা আমাদের বলেছে, লোক পাঠান, আমরা চাষাবাদ ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করতে চাই।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রবাসীদের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও সংস্কার কার্যক্রম তুলে ধরেন।
বাংলাধারা/এসআর
