ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খুশির ঈদযাত্রা: সময়মতো ট্রেন, ঘরমুখো মানুষের উচ্ছ্বাসে মুখর কমলাপুর

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৫, ১০:৪৮ দুপুর  

ছবি: বাংলাধারা

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুরু হয়েছে ঘরে ফেরা মানুষের সেই চিরচেনা যাত্রা- যা আনন্দ, উত্তেজনা আর কিছুটা ভোগান্তির মিশেলে রঙিন হয়ে ওঠে। তবে এবার ঈদের প্রথম দিনের ট্রেন যাত্রায় ছিল এক ভিন্ন চিত্র-শৃঙ্খলা, সময়মতো ট্রেন এবং ঘরমুখো মানুষের মুখে স্বস্তির হাসি।

শনিবার (৩১ মে) ঈদযাত্রার প্রথম দিন সকাল থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছিল উৎসবমুখর। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ১২টি আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এর মধ্যে শুধু রংপুর এক্সপ্রেস মাত্র ২০ মিনিট বিলম্বে ছেড়েছে, বাকিগুলো নির্ধারিত সময়েই প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে, যা যাত্রীদের জন্য ছিল এক বড়ো স্বস্তির বিষয়।

ভোরের আলো ফোটার আগেই কমলাপুরে ভিড় জমাতে থাকেন হাজারো মানুষ। তাদের চোখেমুখে ছিল প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের উচ্ছ্বাস। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, শিশু, বৃদ্ধ- সব বয়সী যাত্রীদের পদচারণায় মুখর ছিল স্টেশন এলাকা।

নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিও ছিল নজরকাড়া। তিন স্তরের নিরাপত্তা চেকিংয়ের আওতায় স্টেশনে প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে শুধুমাত্র টিকিটধারী যাত্রীদের জন্য। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ফলে প্ল্যাটফর্মে ছিল শৃঙ্খলার ছাপ।

ঘরমুখো মানুষের মুখে ঈদের আনন্দ স্পষ্ট। জামালপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী দীনি ইসলাম বলেন, "পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাচ্ছি। কাল থেকেই ছুটি, কিন্তু টিকিট পাইনি, তাই আজ যাচ্ছি। এই বাড়ি ফেরার আনন্দটা সব সময়ই অন্যরকম।"

রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী ইমরান হোসেন জানালেন, "ঈদের কাছাকাছি সময়ে রংপুর যাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই আগে থেকেই টিকিট কেটে আজই পরিবারকে পাঠাচ্ছি। আমার ছুটি পেতে এখনো কয়েক দিন বাকি, তাই একা ঢাকায় থেকে যেতে হচ্ছে।"

অন্যদিকে, সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী আফসানা বেগম বলেন, "ঈদের সময় মানেই পরিবারের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত। অনেক কষ্ট করে হলেও টিকিট সংগ্রহ করেছি। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় টিকিট যাচাইয়ে কঠোরতা ছিল, তবে সবাই শৃঙ্খলাবদ্ধ। এটা প্রশংসনীয়।"

বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা করা হয়েছে। সব ট্রেন ঢাকায় এনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাতেই, যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ছাড়তে পারে।

রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস, অতিরিক্ত কোচ সংযোজন এবং স্টাফ মোতায়েন করা হয়েছে।

এবারের ঈদযাত্রা যেন এক নতুন আশার বার্তা বহন করছে- পরিকল্পনা, নিরাপত্তা এবং সময়মতো ট্রেন চলাচলের সমন্বয়ে একটি স্বস্তির যাত্রা। যাত্রীরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতের ঈদ যাত্রাগুলো হবে আরও আনন্দময় ও নির্ঝঞ্ঝাট।

ঈদের পথে এ যেন সত্যিই এক ‘খুশির যাত্রা’।

 

বাংলাধারা/এসআর