ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদের আনন্দে গান গাইলেন নোবেল, বন্দিদের মুখে হাসির ঝলক

বিনোদন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: জুন ০৮, ২০২৫, ০১:৪৭ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব আর ভালোবাসার পরশ। তবে কারাগারের দেয়ালের ভেতর ঈদের সেই উচ্ছ্বাস যেন সবসময় ঠিকভাবে পৌঁছায় না। কিন্তু এবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘটলো ভিন্ন কিছু। ঈদুল আজহার এই পবিত্র দিনে বন্দিদের মাঝে একটু আনন্দ ছড়িয়ে দিতে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের-যার মূল আকর্ষণ ছিলেন আলোচিত সংগীতশিল্পী মইনুল আহসান নোবেল।

কারাগারের খোলা প্রাঙ্গণে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হয় এই ব্যতিক্রমী আয়োজন। ঈদের দিনে জেলের ভেতর এমন আনন্দমুখর পরিবেশ অনেকের কাছেই ছিল অভাবনীয়। সেখানে উপস্থিত হয়ে নোবেল গেয়ে শোনান জনপ্রিয় কিছু গান- যার মধ্যে ছিল 'অভিনয়', 'ভিগি ভিগি', ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হয়ে গেলে’ সহ আরও কয়েকটি হৃদয়ছোঁয়া গান। নগর বাউল জেমসের গান গেয়ে নোবেল যেন ছুঁয়ে গেলেন উপস্থিত প্রতিটি হৃদয়।

প্রথমে একটু নীরব, কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে থাকলেও গান শুরু হতেই বন্দিরা একে একে মেতে ওঠেন হাততালি, উল্লাস আর নানান অভিব্যক্তিতে। সুরের ধারায় তৈরি হয় এক ভিন্নধর্মী উৎসব, যেখানে কেউ একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়িয়ে হাসছে, গুনগুন করে গাইছে, চোখের কোণে একফোঁটা জলও লুকিয়ে রেখেছে হয়তো।

নোবেল নিজেও ছিলেন আবেগাপ্লুত। নিজের অবস্থান ও প্রেক্ষাপটের বাস্তবতা ভুলে তিনি যেন গানে খুঁজছিলেন নিজের মুক্তি। হয়তো ভেতরে ভেতরে একটা বার্তা দিতে চেয়েছেন- ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ জীবনে সবসময় থাকে। ঈদের এই দিনে কারাগারের প্রাচীর ঘেরা জীবনেও তাই একটু আশার আলো ছড়িয়ে দিলেন তিনি।

কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা জানান, “বন্দিদের মানসিক প্রশান্তি ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে প্রতি ঈদেই আমরা কিছু না কিছু আয়োজন করি। তবে এবারের আয়োজনটা একটু আলাদা ছিল। একজন জনপ্রিয় গায়ক যখন একই সঙ্গে একজন বন্দিও হন, তখন তার গান শুনে অন্য বন্দিদের যে আবেগ তৈরি হয়, সেটা সত্যিই অনন্য।”

নোবেলের ভক্তদের অনেকে হয়তো আশা করছেন, ঈদের এই উপলক্ষ তাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে, নিজেকে গুছিয়ে আবারও ফিরতে পারবেন গানের সেই পরিচিত আঙিনায়।

এমন একটি দিনে, যখন অধিকাংশ মানুষ পরিবার-পরিজনের সাথে সময় কাটান, তখন বন্দিদের সাথে একাত্ম হয়ে গান গেয়ে তাদের মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন নোবেল। হয়তো ঈদের সেরা উপহার ছিল সেটাই—একটা বিকেল, একটু আনন্দ, কিছু সুর, আর অনেকটা আশা।


বাংলাধারা/এসআর