ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বারের মতো স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হল
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৯:২৬ রাত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বারের মতো স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (এসভিআইএফএফ)- ২০২৫ অনুষ্ঠিত হল। গত ১১ থেকে ১৪ তারিখ অবধি মোট ৮টি জায়গায়।। তাঁর মধ্যে অন্যতম হল ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজ যেখানে তিনদিন এই উৎসব হয়েছে। দেশ বিদেশের নানান ছবি প্রদর্শন করা হয় তাতে। ১৩ ও ১৪ তারিখে উৎসব পালন করা হয় আইলিড, তপশিয়া, কলকাতায় ।
এছাড়া এক দিন করে চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হয়েছিল যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁদের মধ্যে - আনন্দমোহন কলেজ, ভাঙর মহাবিদ্যালয়, নিবেদিতা শিশু তীর্থ একাডেমি, শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ অমৃত মহাবিদ্যালয়, গণিপুর শীতলা হাইস্কুল, রামকৃষ্ণ সোসাইটি অনাথ ভান্ডার,। ১৪ তারিখ ছিল উৎসবের শেষ দিন, এইদিন বিশেষ বিশেষ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী র মধ্যে দিয়ে এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবটির সমাপ্তি ঘটেছিলো। আলোচনার প্রধান বক্তা ছিলেন মুম্বাই থেকে আগত প্রযোজক, পরিচালক রাজ ভট্টাচার্য্য ও মানস বসু। এরপর শুরু হয় পুরষ্কার বিতরণীর । এই দিনের উৎসবের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিচালক, প্রয়োজক ও অরোরা ফিল্মস এর কর্ণধার অঞ্জন বসু। তিনি দীপ প্রজ্জ্বলন ও স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঐদিনের অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য তথ্যচিত্র পরিচালক শীলা দত্ত, ও ওর ইন্ডিয়া এর সম্পাদক বিকাশ বিশ্বাস ও অন্যান্য গুণীজন । এই উৎসবের জুরী ছিলেন চিত্র পরিচালক মানস বসু, অধ্যাপক সুমন্ত বন্দোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ মজুমদার, চিত্তরঞ্জন বিসওয়ালা এবং বাংলাদেশ থেকে ড. নুরুল ইসলাম বাবুল ।
আরও উপস্থিত ছিলেন ড.নূরান নবী, যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী ও লেখক, যাকে নিয়ে একটি তথ্য চিত্র নির্মাণ করেছেন কানাডার বিশিষ্ট পরিচালক নাদিম ইকবাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ড. জিনাত নবী সহ অন্যান্য গুণীজন। ফেস্টিভ্যাল ডাইরেক্টর পল্লব রায় জানান যে তারা শুধু শহর কেন্দ্রীক চলচ্চিত্র করতে চাননা। এক মহত উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের এই উৎসব। তারা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের মানবিক, চিন্তাশীল ও ভাতৃত্ব বোধকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে এবং চলচ্চিত্র মনস্ক শিক্ষিত দর্শক তৈরী করা যায়, যাতে তারা হলমুখী হয় ভবিষ্যতে। এই জন্যই এই চলচ্চিত্র উৎসব। এবং নতুন প্রজন্মের হাতে মোবাইল গ্যাজেট, ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবকিছুই তারা দেখতে পারে কিন্তু ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষমতা তাঁদের মধ্যে অনেকেরই থাকে না। তাই এই উৎসব তাঁদের জন্য। এবং এই উৎসব অবশ্যই শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন আলো নিয়ে আসবে।
গত ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর বিবেকানন্দ কলেজ, ঠাকুরপুকুরে তিন দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হয়। ১১ সেপ্টেম্বর এই ফেস্টিভ্যালের শুভ উদ্ভোধন করেন বিশ্ব বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিচালক শীলা দত্ত, অনুপকুমার রায়চৌধুরী, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নবকিশোর চন্দ, ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর পল্লব রায়, ড. নুরুল ইসলাম বাবুল ও অন্যান্য অধ্যাপক মন্ডলী। ড. বাবুল বলেন, অবশ্যই আগামী প্রজন্মের কাছে এই উৎসব হয়ে উঠবে এক আকর্ষনীয় ও জ্ঞানমূলক উৎসব। আরেকজন অন্যতম এক্সিকিউটিভ সদস্য ডা: মুনমুন দত্ত, বাচিকশিল্পী, লেখক ও সোশাল অ্যাকটিভিস্ট সংস্হার পক্ষ থেকে বলেন: এই উৎসব আমাদের সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এটা আমাদের এক ধরণের কর্তব্য, স্বামী বিবেকানন্দের বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব জনমানসে পৌঁছে দেওয়া।
উৎসবে প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশী ছবি দেখানো হয়েছিল এর মধ্যে ১০ টি দেশী ও বাকি বিদেশী ছবি। বাংলাদেশের তথ্যচিত্র ড. নূরান নবী, ফ্রিডম ফাইটার ফর এভার। দর্শকদের মন কেড়ে ছিল। এই উৎসবে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও বিজ্ঞানী নূরান নবী ও স্ত্রী সুদূর ক্যালিফর্নিয়া থেকে এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এসেছিলে কানাডা থেকে পরিচালক নাদিম ইকবাল। তিনি দুটো পুরস্কার জিতে নেন। বেস্ট ফিচার ডকুমেন্টেরি “ ড. নূরান নবী, ফ্রিডম ফাইটার ফর এভার ও বেস্ট ডাইরেক্টর মাদার টাং ছবির জন্য। এটা ড. নূরান নবীকে sviff এর পক্ষ থেকে ওয়ার্ল্ড ব্রাদারহুড পুরুস্কার ও লাইফ টাইম মেম্বারশিপ সম্মানও প্রদান করা হয়। উৎসবের পরিশেষে সবাই আশা ব্যক্ত করেন আগামী বছরের উৎসবে বাংলাদেশও পরিপূর্ণ ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে।