শহীদ মিনারে ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে শেষ শ্রদ্ধা
প্রকাশিত: অক্টোবর ০৪, ২০২৫, ১২:১৮ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার সকালে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, যেখানে ভাষা আন্দোলনের এই অন্যতম সংগঠকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাঁর মরদেহ নেওয়া হবে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহমদ রফিকের ইচ্ছানুযায়ী তাঁর দেহ দান করা হবে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার কাজে। মরণোত্তর দেহ দানের এই সিদ্ধান্তকে ফাউন্ডেশন মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আহমদ রফিক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরে ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা আহমদ রফিক ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসবিদ হিসেবে আহমদ রফিকের অবদান অমূল্য। তিনি শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায়ও তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে স্বীকৃত; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে দিয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।
জীবনের শেষ কয়েক বছর নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন আহমদ রফিক। ২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করলে অস্ত্রোপচার করা হলেও ফল মেলেনি, ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
বাংলা ভাষা আন্দোলন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য জীবন উৎসর্গ করা আহমদ রফিককে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে আজ শহীদ মিনারে মানুষের ঢল প্রমাণ করছে, বাংলাদেশ তাঁকে চিরকাল স্মরণে রাখবে।
বাংলাধারা/এসআর