ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৯:৩৭ সকাল  

ছবি: সংগৃহিত

ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঢেউয়ের মুখে পড়েছে যুক্তরাজ্য। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গন দুই দিক থেকেই চাপে রয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এই চাপ আরও বেড়ে গেছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টারমার সরকারের ভেতর থেকেই একাধিক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী- যেমন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিচারমন্ত্রী এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী, ফিলিস্তিনকে দ্রুত স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুলেছেন। যদিও যুক্তরাজ্য এখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তবে সরকারের অভ্যন্তরে নীতিগত পরিবর্তন নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্লোভেনিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আয়ারল্যান্ড ও স্পেন ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, “নেতানিয়াহু যা ধ্বংস করতে চাইছেন, আমাদের উচিত তার বিপরীতে একসঙ্গে দাঁড়ানো। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ।”

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সম্প্রতি সতর্ক করে বলেন, গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকলে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে। পরিস্থিতির উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে সোমবার ব্রিটেন ২৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দেয়। এতে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হয় এবং ইসরায়েলের বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা ও ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার নিন্দা জানানো হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের রূপরেখা নিয়ে নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই জাতিসংঘে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে ফ্রান্স ও সৌদি আরব। মূলত জুন মাসে এই সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও, ইসরায়েলের ইরানে সামরিক হামলা এবং কয়েকটি আরব দেশের সম্মেলন থেকে সরে আসার কারণে তা পেছানো হয়।

তবে এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটনের এই অনুপস্থিতি মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি মার্কিন প্রশাসনের অবস্থান নিয়েও নতুন প্রশ্ন তুলছে।

ইউরোপে যখন একের পর এক দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তখন ব্রিটেনের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্য বহন করবে। কেয়ার স্টারমার সরকারের সামনে এখন রয়েছে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরেও এই ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

বাংলাধারা/এসআর