ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আইইপিএমপি বাতিল ও জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্প বন্ধের আহ্বান তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫, ১১:৩২ রাত  

ছবি: বাংলাধারা

বাংলাদেশের সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাতিল এবং সব নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি–ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধের দাবি উঠেছে তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ- ২০২৫ থেকে। বক্তারা বলেন, বর্তমান জ্বালানি নীতির ধারা দেশকে কয়লা ও এলএনজি আমদানিনির্ভর ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা একদিকে জলবায়ু সংকটকে তীব্র করছে, অন্যদিকে বাড়াচ্ছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি।

সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের সমাপনী দিনে পরিবেশ সুরক্ষা ও জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে ৮ দফা ‘খসড়া জনগণঘোষণা’ প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই সমাবেশে উপকূল, হাওর, চর ও বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে আসা জেলে, কৃষক, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, নারী, যুব, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীসহ মোট ১ হাজার ৯৪৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর সদস্য সচিব শরীফ জামিল। তিনি বলেন, আইইপিএমপি ও মহেশখালী- মাতারবাড়ী উন্নয়ন উদ্যোগের মতো বৃহৎ পরিকল্পনাগুলো বাংলাদেশের জলবায়ু বাস্তবতা ও জনগণের প্রয়োজনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ব্যয়বহুল কয়লা ও এলএনজি নির্ভরতার ফলে ক্যাপাসিটি পেমেন্টের চাপ বাড়ছে এবং প্রকৃত চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তুলে জনগণের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে।

ঘোষণাপত্রে স্পষ্টভাবে সব নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক প্রকল্প বাতিল, আইইপিএমপি ও এমআইডিআই মাস্টারপ্ল্যান প্রত্যাহার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে দ্রুত ও ন্যায়ভিত্তিক রূপান্তরের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে সৌর বিদ্যুৎ, ব্যাটারি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, স্মার্ট গ্রিডে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন ঋণের পরিবর্তে অনুদান হিসেবে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর উন্নয়ন ও অপরিকল্পিত শিল্পায়নের কারণে নদীভাঙন, লবণাক্ততা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও পরিবেশ দূষণের মতো সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবন-জীবিকা ও খাদ্যনিরাপত্তার ওপর।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ৮ দফা জনগণঘোষণা সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি এটি জ্বালানি খাতে ন্যায়ভিত্তিক, পরিবেশবান্ধব ও জনগণকেন্দ্রিক রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।


বাংলাধারা/এসআর