ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রকে শর্তে ফেলতে চাপ কৌশলে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: আগস্ট ০১, ২০২৫, ১১:৩৫ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আগ্রহ দেখালেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কাছে আগের আগ্রাসনের ব্যাখ্যা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কেবল আলোচনায় বসা যথেষ্ট নয়, আস্থা পুনঃস্থাপনের আগে দোষ স্বীকার ও প্রতিশ্রুতি জরুরি।

ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাকচি বলেন, “তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে যখন আলোচনা চলছিল। এখন তারা যদি সত্যিই আলোচনা চায়, তাহলে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং নিশ্চয়তা দিতে হবে, এই ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।”

চাপ প্রয়োগের তিন ধাপ

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরানের চাপ তৈরির কৌশল। তেহরান তিনটি শর্তে আলোচনা চালাতে চায়—দায় স্বীকার, ক্ষতিপূরণ ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। তারা অপ্রত্যক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ জনমতকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।

পূর্ববর্তী সংঘাতের পটভূমি

গত ১৩ জুন ইসরায়েলের হামলায় ইরানে একাধিক সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। পরে যুক্তরাষ্ট্রও বিমান হামলা চালায় ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায়, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে দাবি করছে তেহরান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান দখলকৃত ফিলিস্তিন ও কাতারের মার্কিন ঘাঁটি আল-উদাইদে পাল্টা হামলা চালায়।

এই উত্তেজনার মধ্যেই ১৫ জুন ওমানে নির্ধারিত ষষ্ঠ দফা আলোচনা বাতিল হয়ে যায়। ২২ জুন ইরানের পাল্টা জবাবে ইসরায়েল অস্ত্রবিরতির অনুরোধ জানায়।

আলোচনায় শর্ত, ছাড় নয়

আরাকচি বলেন, “আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তবে এই দরজা তখনই খুলবে, যদি যুক্তরাষ্ট্র সদিচ্ছা দেখায়।” তিনি হুঁশিয়ার করেন, “যদি তারা শূন্য মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চায়, তাহলে আলোচনার কোনো ভিত্তিই থাকবে না।”

ইউরোপীয়দের প্রতি সতর্কতা

ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানিকে লক্ষ্য করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যদি তারা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম চালু করে, তাহলে সেটা হবে আলোচনার সমাপ্তি। নিষেধাজ্ঞা তোলার বাস্তব পদক্ষেপ না থাকলে এসব প্রচেষ্টা অর্থহীন।”

বাংলাধারা/এসআর