যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন
বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে, রয়ে গেছে কিছু উদ্বেগ
প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১০:১৮ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
দেশের শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ এখনও বিদ্যমান, এমন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৪ সালের মানবাধিকার-বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত পূর্ববর্তী সরকারের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে দীর্ঘ সময় ধরে দায়ীদের জবাবদিহির বাইরে রাখার প্রবণতা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হয়। এই সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠার পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন এবং ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রতিবেদনের মতে, আগস্টে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও মানবাধিকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হয়।
প্রতিবেদনে পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বেআইনি বা ইচ্ছাকৃত হত্যা, গুম, নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত দমননীতি, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর বাধা, সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি, অযৌক্তিক মামলা, সেন্সরশিপ, শ্রমিক সংগঠন গঠনে বাধা, শ্রমিক নেতাদের ওপর সহিংসতা এবং শিশুশ্রমের ভয়াবহ বিস্তার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অপরাধের দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার উদ্যোগ ছিল খুবই সীমিত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও বিচার বা শাস্তি দেওয়ার ঘটনা ছিল বিরল।
হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন সরকার জাতিসংঘের সহযোগিতায় সাধারণ আদালত এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, দুটি কাঠামো ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের সহিংসতায় জড়িতদের বিচারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও আইনের শাসন সুসংহত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাধারা/এসআর