রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতকে শাস্তি, কিন্তু চীনকে ছাড়
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ১১:৫৪ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
রাশিয়ার তেল আমদানিকে ঘিরে ভারত ও চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ভিন্ন রূপ নিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু একই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রুশ তেল ক্রেতা চীনের ক্ষেত্রে এখনো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আগস্টের শুরুতে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান ট্রাম্প। এর ফলে শুল্কহার দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, রাশিয়ার সস্তা তেল কিনে ভারত মস্কোর যুদ্ধ অর্থায়নে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, ভারত শুধু তেল আমদানিই করছে না, তা প্রক্রিয়াজাত করে আবার রপ্তানিও করছে, যার মাধ্যমে দেশটির কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি মুনাফা করেছে।
অন্যদিকে চীন ২০২৪ সালে রাশিয়া থেকে ১০৯ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা তাদের মোট আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ। ভারতের আমদানি ছিল ৮৮ মিলিয়ন টন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের দাবি, যুদ্ধের আগে ভারতের রুশ তেল আমদানি ছিল ১ শতাংশেরও কম, কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে। এ অবস্থাকে তিনি "আর্বিট্রাজ ব্যবসা" বলে আখ্যা দেন।
তাহলে চীনকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে কেন? বিশ্লেষকদের মতে, এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে।
প্রথমত, বিরল খনিজ (রেয়ার আর্থস) সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। গাড়ি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সামরিক প্রযুক্তিসহ বহু খাতে এসব খনিজ অপরিহার্য।
দ্বিতীয়ত, ক্রিসমাস মৌসুমকে সামনে রেখে মার্কিন বাজারে বিপুল চীনা পণ্য প্রবেশ করছে। এখন শুল্ক বাড়ালে সরাসরি দাম বাড়বে, যা ভোক্তাদের ওপর চাপ ফেলবে।
তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিং আংশিক শুল্কবিরতিতে পৌঁছেছে। দুই দেশই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে আপাতত ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তবে সমালোচকরা মনে করেন, এই নীতি দ্বিমুখী। একদিকে ভারতকে কঠোর শাস্তির মুখে ফেলছে ওয়াশিংটন, অন্যদিকে চীনকে ছাড় দিচ্ছে। হোয়াইট হাউস এখনো স্পষ্ট করে জানায়নি চীনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ আসবে কি না। ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি হয়তো "দু–তিন সপ্তাহ পর" সিদ্ধান্ত নেবেন।
বাংলাধারা/এসআর