ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূল প্লাবিত- জোয়ারের চাপে ঘরবাড়ি-সড়ক ডুবে গেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:০১ রাত  

ছবি: বাংলাধারা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরের উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৩ ফুট বেড়ে গেছে। ফলে মেঘনার তীরবর্তী বহু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল থেকে সদর ও হাইমচরের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও শহরের কিছু এলাকা পানির নিচে চলে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সন্ধ্যা ৬টায় জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে ২১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়।

বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকেই নদীতে পানি বাড়তে থাকে। এতে সদর উপজেলার পুরানবাজার, হানারচর, চান্দ্রা ইউনিয়নের নিচু এলাকা ও হাইমচরের বেশ কিছু স্থানে পানি ঢুকে পড়ে। পুরানবাজারের শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় নদীর পানি সড়কের সমান অবস্থানে চলে আসে।

পুরানবাজারের রনাগোয়াল এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিকেল থেকেই বাতাসের সঙ্গে ঢেউও বেড়েছে। দোকানের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে, তাই মালপত্র নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছি।

হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ বলেন, ফেরিঘাট এলাকার রাস্তা এখন পানির নিচে। আশপাশের নিচু এলাকা একেবারে তলিয়ে গেছে।

চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী জানান, সেচ প্রকল্পের বাইরে থাকা সব ঘরবাড়ি, রাস্তা ও পুকুরে পানি ঢুকেছে। আমার পুকুরের উপর দিয়ে পানি বইছে, এতে মাছ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাস্তা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, আমরা জুলাই মাসের শুরুতেই সমন্বয় সভায় মৎস্যচাষীদের সতর্ক করেছিলাম। জানিয়েছিলাম ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানির উচ্চতা বাড়তে পারে। তারপরও স্থানীয়ভাবে জেলেদের সতর্ক করতে প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ মো. শোয়েব বলেন, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের কারণে ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত অতিরিক্ত জোয়ার হতে পারে- এমন সতর্কবার্তা আমরা আগেই দিয়েছিলাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পানি কিছুটা বেড়েছে ঠিকই, তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আজ বিকেলে জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপরে গিয়ে ২১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।"

স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে বৃষ্টির সঙ্গে আবারও যদি বাতাসের গতি বাড়ে, তবে জোয়ার আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। উপকূলীয় মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তৎপর হয়েছেন।


বাংলাধারা/এসআর