গাজায় হামলা ও ক্ষুধায় একদিনে আরও ৭১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১০:৫৩ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা এবং তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই অপুষ্টি ও অনাহারের কারণে মারা গেছেন।
রোববার (২৭ জুলাই) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার সারাদিন ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪২ জন ছিলেন ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ সাধারণ মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খাদ্য সংকটের কারণে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চলমান যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জনে, যার মধ্যে ৮৫ জন শিশু।
বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে শনিবার রাতে ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে যে রোববার থেকে ত্রাণ করিডোর ও বেসামরিক এলাকাগুলোতে ‘সাময়িক হামলা বিরতি’ দেওয়া হবে। তবে কোন কোন এলাকায় এই বিরতি কার্যকর হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। ইসরায়েল দাবি করছে, জাতিসংঘ ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলের কঠোর অবরোধ এবং অনুমতির বাধার কারণেই ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
ইসরায়েল বলছে, তারা আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতও আকাশপথে ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। তবে মানবিক সহায়তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ ঝুঁকিপূর্ণ, ব্যয়বহুল এবং সড়কপথের বিকল্প হতে পারে না। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, “আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ মূল সমস্যার সমাধান নয়, বরং এটি মনোযোগ সরানোর অকার্যকর উপায়।” তিনি ইসরায়েলকে অবরোধ তুলে সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ঘোষিত ‘হিউম্যানিটেরিয়ান পজ’ কার্যত কোনো সহায়তা দিচ্ছে না। তিনি বলেছেন, “এ পর্যন্ত মাত্র সাতটি প্যালেটজাত ত্রাণ ফেলা হয়েছে, যা একটি ট্রাকের চেয়েও কম।” প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব ত্রাণ ফেলা হয়েছে উত্তর গাজার একটি সামরিক নিষিদ্ধ এলাকায়, যেখান থেকে রাতের বেলায় তা সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব।
শনিবার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি টেন্ট ক্যাম্পে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এলাকাটি ইসরায়েলের ঘোষিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হলেও হামলা থেমে নেই। এদিকে গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, জ্বালানি ও যন্ত্রাংশ শেষ হয়ে আসায় তারা শিগগির জীবনরক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে না। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেছে, “অবিলম্বে ইসরায়েলকে চাপ দিতে হবে যাতে জ্বালানি ও যন্ত্রাংশ প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়।”
বাংলাধারা/এসআর