বাংলাদেশের রপ্তানি শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি
প্রকাশিত: আগস্ট ০২, ২০২৫, ০৬:২৯ বিকাল
_20250802182837_original_16.webp)
ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানিয়েছেন, এসব চুক্তি চূড়ান্ত হলে রপ্তানি পণ্যের শুল্ক হার আরও কমানো কিংবা পুনর্নির্ধারণের সম্ভাবনা আছে। এজন্য তিনি বাংলাদেশকে আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে শুল্ক হ্রাসের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ঘোষণাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে মাহমুদ হাসান খান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুল্ক কাঠামো প্রণয়ন করেছে, যা গত চার মাস ধরে আমাদের বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল। বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হার আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছাকাছি, যেমন- চীনের শুল্ক ৩০ শতাংশ ও ভারতের ২৫ শতাংশ।”
তিনি জানান, এই সাফল্য একদিনে আসেনি। গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র “লিবারেশন ডে ট্যারিফ” নামে নতুন শুল্ক ব্যবস্থা ঘোষণা করে। তখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায়, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ যায়, যার মধ্যে তৈরি পোশাকের অংশ ৮৭ শতাংশ।
প্রাথমিকভাবে ৯ এপ্রিল থেকে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হয়। তবে ৫ এপ্রিল থেকে ১০ শতাংশ বেস ট্যারিফ কার্যকর রাখা হয়। তিনি বলেন, “৯০ দিনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় অতিক্রান্ত হলেও অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছিল। জুনের মাঝামাঝি জানতে পারি, সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি গোপনীয়তা চুক্তির (NDA) আওতায় খসড়া চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। বেসরকারি খাত সরাসরি যুক্ত না থাকায় আমাদের উদ্বেগ বেড়েছিল।”
পরিস্থিতির ধারাবাহিক অগ্রগতি তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ২ জুলাই ভিয়েতনামের শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। এরপর তিন মাসের আলোচনার পর ৭ জুলাই বাংলাদেশের শুল্কও ৩৫ শতাংশে নেমে আসে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত আলোচনার সময়সীমা বর্ধিত হওয়ার পর ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন ১৯ শতাংশ শুল্কে সমঝোতায় পৌঁছায়।
মাহমুদ হাসান খান আরও বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সরকারকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করতে। মার্কিন দূতাবাসসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও তার টিমের নেতৃত্বে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন, আসন্ন চুক্তি চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান নিতে পারবে।
বাংলাধারা/এসআর