বিশ্ব খাদ্য সংকট প্রতিবেদনে বাংলাদেশ চতুর্থ, সরকারের প্রতিবাদ
প্রকাশিত: আগস্ট ০৫, ২০২৫, ১২:৪৮ দুপুর

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব খাদ্য সংকট ২০২৫–এর রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশে তীব্র বিতর্কের ঝড় উঠেছে। জাতিসংঘের পাঁচটি সংস্থার যৌথ এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে চতুর্থ সর্বোচ্চ খাদ্য সংকটে পড়া দেশ এখন বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিকেই এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রায় ২ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ফসল ও গবাদিপশু ধ্বংস হয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। শুধু কৃষিখাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর সাথে ডলার সংকটও ঘনীভূত হয়, যখন স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠরা হঠাৎ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
সরকারি কর্মকর্তারা যদিও এই প্রতিবেদনকে “ভ্রান্ত” এবং “পুরনো তথ্যনির্ভর” বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। খাদ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বর্তমানে দেশে ২০ লাখ টনেরও বেশি চাল, গম ও ধান মজুদ আছে—সুতরাং কোনো খাদ্য সংকটের আশঙ্কা নেই।
“এই রিপোর্ট গত বছরের সাময়িক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি,” বলেন খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান। “বর্তমানে বাংলাদেশের খাদ্য মজুদ সাম্প্রতিক স্মৃতিতে সর্বোচ্চ। দুর্ভিক্ষ নেই, জরুরি পরিস্থিতিও নেই।”
সরকারের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো দাবি করেছে, স্থানীয় গণমাধ্যম বিশেষ করে প্রথম আলো, পুরনো তথ্যকে হাতিয়ার করে জনগণের মধ্যে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এবং চালের বাজারকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
“আমরা এখানে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছি,” মন্তব্য করেন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। “এসব আন্তর্জাতিক রিপোর্ট মনিটর করতে হবে, না হলে তা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে পারে।”
দেশ যখন এক রাজনৈতিক রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তখন খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হওয়া এই ‘আখ্যান যুদ্ধ’ দেশের ইতিমধ্যে নাজুক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।