৯৫ শতাংশ কোম্পানির এআই বিনিয়োগ ব্যর্থ: এমআইটির গবেষণা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৫, ০১:৩৮ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো খরচ কমানো ও মুনাফা বাড়ানোর আশায় দ্রুতগতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এসব প্রকল্পের বেশির ভাগই প্রত্যাশিত ফল দিচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
‘দ্য জেনএআই ডিভাইডেড: স্টেট অব এআই ইন বিজনেস ২০২৫’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তিতে ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো ৩০০০ থেকে ৪০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। অথচ এর ৯৫ শতাংশ প্রকল্প থেকেই আর্থিকভাবে কোনো রিটার্ন আসছে না।
গবেষণায় ৩০০টি এআই ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত বিশ্লেষণ এবং ৩৫০ জনেরও বেশি কর্মীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। দেখা যায়, চ্যাটজিপিটি ও কোপাইলটের মতো টুল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হলেও মাত্র ৫ শতাংশ কোম্পানি সেগুলো ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য মুনাফা অর্জন করতে পেরেছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও লোকসান বা শূন্যফল অবস্থায় আছে।
প্রতিবেদন বলছে, প্রায় ৮০ শতাংশ কোম্পানি এসব টুল পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়েছে এবং ৪০ শতাংশ কোম্পানি তা কার্যকরভাবে ব্যবহার শুরু করেছে। তবে এগুলো মূলত ব্যক্তিগত কর্মক্ষমতা বা উৎপাদনশীলতা বাড়ালেও, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক লাভক্ষতির খাতায় তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। বরং অনেক বড় কোম্পানি নিজেদের তৈরি কাস্টম এআই সিস্টেম নিঃশব্দে সরিয়ে নিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ব্যর্থতার মূল কারণ প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা নয়, বরং এআইকে বিদ্যমান কাজের কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জটিলতা। এর সঙ্গে কর্মীদের দক্ষতার ঘাটতিও বড় একটি প্রতিবন্ধকতা। তবুও অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দায় দিচ্ছেন প্রযুক্তিকেই।
ফাস্টফুড জায়ান্ট টাকো বেল-এর চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড টেকনোলজি অফিসার ডেন ম্যাথিউজ বলেন, তাঁদের রেস্টুরেন্টে ড্রাইভ-থ্রু সেবায় এআই ব্যবহার উল্টো নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই তারা এখন এ প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক হচ্ছে। তাঁর ভাষায়, “কিছু পরিস্থিতিতে মানুষের হাতেই কাজ ভালো হয়, বিশেষত যখন রেস্টুরেন্টগুলো ব্যস্ত থাকে। আমরা দলকে শেখাচ্ছি কখন এআই ব্যবহার উপযুক্ত আর কখন মানবিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
অন্যদিকে, চলতি বছরের জুনে অ্যাপল এক গবেষণায় জানায়, নতুন প্রজন্মের এআই মডেলগুলো প্রকৃত অর্থে যুক্তি বিশ্লেষণ বা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে না। বরং এগুলো কেবল অতীতের প্যাটার্ন মুখস্থ রাখে এবং সেগুলোর পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে কাজ চালায়।
অ্যাপলের ভাষায়, প্রশ্নের ধরন বদলালেই বা জটিলতা বাড়লেই এআই মডেলগুলো ভেঙে পড়ে। সহজ কথায়, যখন প্যাটার্ন পরিষ্কার ও পরিচিত থাকে, তখনই এআই কার্যকর; কিন্তু নতুন বা জটিল পরিস্থিতিতে প্রযুক্তিটি কার্যক্ষমতা হারায়। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
বাংলাধারা/এসআর