ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

টিকা কার্যক্রমে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

‘জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, একটি শিশুও বাদ যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ০৭, ২০২৫, ০৩:১০ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রমে শতভাগ শিশু অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, কোনো অজুহাতেই যেন একটি শিশুও টিকা থেকে বাদ না যায়। জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, প্রত্যেক শিশুকেই এই টিকার আওতায় আনতে হবে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫-এর জাতীয় অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “ডায়রিয়া ও রাতকানার মতো অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ন্ত্রণে এনেছি আমরা। তবুও আজও শিশুদের টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয় বা স্থায়ীভাবে অঙ্গহানির শিকার হতে হয়-এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জার বিষয়। টাইফয়েড কোনো অজানা রোগ নয়, এটি প্রতিরোধযোগ্য। এবার আমরা দেরিতে হলেও টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছি এবং আমি আশাবাদী, এটিও সফল হবে।”

তিনি আরও বলেন, টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকে অল্পবয়সী শিশুরা। অথচ এখনো অনেক পরিবার জানে না, দেশে টাইফয়েডের টিকা সহজলভ্য। এই অজ্ঞতা ও সচেতনতার অভাব দূর করতে হবে। এজন্য মসজিদ, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টারসহ সব জায়গায় প্রচারণা চালাতে হবে, যাতে মানুষ ভয় বা বিভ্রান্তি ছাড়াই টিকা নিতে উৎসাহিত হয়।

নূরজাহান বেগম বলেন, “টিকাদান শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয়। সমাজের শিক্ষক, ইমাম, জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মিডিয়াও এই প্রচারে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। স্বাস্থ্য খাত একা কখনো সফল হতে পারে না; সামাজিক সহযোগিতাই আমাদের শক্তি।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রশাসনিক জটিলতায় যেন কেউ টিকা নিতে সমস্যায় না পড়ে। টিকা বিনামূল্যে, সহজলভ্য ও সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। “কারণ, একটি শিশু বাদ পড়া মানে পুরো পরিবার ঝুঁকিতে থাকা।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে সফল উদ্যোগ। শিগগির টাইফয়েড টিকাকেও নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে মাঠপর্যায়ে দক্ষ জনবল তৈরির ওপর জোর দেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম, এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া, ইউনিসেফের প্রতিনিধি দীপিকা শর্মা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রাজেশ নরওয়ানসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।

বাংলাধারা/এসআর