ডিজিটালাইজেশনে কমেছে দুর্নীতি ও ভোগান্তি: আসিফ নজরুল
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:৩৪ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
ডিজিটালাইজেশনের ফলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতে দুর্নীতি ও ভোগান্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “অতীতে প্রবাসী অ্যাপসের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা আদায় করা হতো। বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মীদের কাছ থেকেও নানা পর্যায়ে দুর্নীতি চলত। এই অনিয়ম বন্ধ করতেই আমরা প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি।”
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর সহযোগিতায় সরকার ‘ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে। এর মাধ্যমে বিদেশে গমন প্রক্রিয়া শতভাগ ডিজিটাল করা হয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “ডিজিটালাইজেশনের কারণে এখন দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তির সুযোগ অনেকটাই কমে এসেছে। তবে মনে রাখতে হবে, মেশিনের পেছনেও মানুষ থাকে। সিস্টেমের দায়িত্বে থাকা মানুষগুলোকেও তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করেছেন, তারা প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রবাসীদের গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিফলন হিসেবে ঢাকা বিমানবন্দরে আমরা রুটিন কাজের বাইরে প্রথমবারের মতো কিছু বিশেষ উদ্যোগ নিতে পেরেছি। যদিও এসব এখনো পর্যাপ্ত নয়।”
সৌদি আরবের সঙ্গে সাম্প্রতিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে। এর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল মিলবে। সৌদি কর্তৃপক্ষ নিজেরাই স্বীকার করেছেন, এ ধরনের চুক্তি আগে বাংলাদেশ, এমনকি ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গেও হয়নি।”
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “আগে সিঙ্গেল ভিসার কারণে অনেক শ্রমিক দেশে এলে আর ফিরে যেতে পারতেন না। আমরা চেষ্টা করে সেটি মাল্টিপল ভিসায় রূপান্তর করতে পেরেছি, যা প্রথমবারের মতো সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট নিয়ে বহু অভিযোগ ছিল। আমরা সেই সিন্ডিকেট সম্পূর্ণভাবে ডিলিস্টিং করেছি। প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে অবৈধ মুনাফা আদায়ের সুযোগ আর দিতে চাইনি, এখনো দিচ্ছি না।”
ভবিষ্যৎ সরকারগুলোর প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “পরবর্তী সরকারগুলো যদি জনগণের প্রতি ন্যূনতম দায়বদ্ধতা ও কৃতজ্ঞতা রাখে, তাহলে আমাদের শুরু করা কাজগুলো আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তাদের হাতে সময় বেশি থাকবে, সুযোগও বেশি থাকবে প্রবাসীদের কল্যাণে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার।”
বাংলাধারা/এসআর
