পশ্চিম তীর সংযুক্তির উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ০৪:২৫ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
অধিকৃত পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে সংযুক্ত করার পথে অগ্রসর হচ্ছে ইসরায়েল। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে এ সংক্রান্ত একটি প্রাথমিক বিল পাস হয়েছে। তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই উদ্যোগ কার্যকর হলে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সহযোগিতা হারাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঘোষিত শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পরও গাজার কিছু এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা অব্যাহত থাকায় শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, “ইসরায়েল পশ্চিম তীরে কিছুই করবে না।” এর আগের দিন টাইম সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম তীর সংযুক্তির বিপক্ষে। আমি আরব দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া হবে না। যদি হয়, তাহলে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা হারাবে।”
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছেন, “পশ্চিম তীর সংযুক্তির বিল পাস করা একেবারেই বোকামি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি স্পষ্ট, ইসরায়েল কোনোভাবেই অধিকৃত ভূখণ্ডকে নিজেদের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারে না।”
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরের অবস্থান সবসময়ই মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। জর্ডান নদীর পশ্চিমে অবস্থিত এই ভূখণ্ডের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে ইসরায়েল এবং পূর্বে জর্ডান। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখল করে নেয়, তবে ফিলিস্তিন এখনো এটিকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে আসছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থানের পেছনে কূটনৈতিক একটি বড় কারণও রয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ইসরায়েল ও একাধিক আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে চুক্তির মধ্যস্থতা করেন, তা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে পরিচিত। এই চুক্তিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, ইসরায়েল পশ্চিম তীরের কোনো অংশ দখল করবে না।
এখন ইসরায়েল যদি পশ্চিম তীরের বড় অংশ বা সম্পূর্ণ অঞ্চল সংযুক্ত করার পথে এগোয়, তাহলে তা আব্রাহাম অ্যাকর্ডস-এর সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হবে। এতে শুধু ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনকারী আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক ভারসাম্যও ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাধারা/এসআর
