ঢাকা, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২

ত্বকের ক্ষতি ডেকে আনে যেসব খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৫, ১২:৩২ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

আজকাল আমরা বেশিরভাগ সময়েই মুখরোচক খাবারের প্রলোভনে পড়ে যাই। রাস্তার ধারের ভাজাভুজি থেকে শুরু করে ফাস্ট ফুড কিংবা আইসক্রিম- সবই সহজলভ্য ও সুস্বাদু বলে প্রায় না ভেবেই খেয়ে ফেলি। কিন্তু এই সাময়িক স্বাদের পেছনে লুকিয়ে আছে ত্বক ও স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি, যা আমরা অনেক সময় টেরই পাই না।

সুন্দর ও সুস্থ ত্বক ধরে রাখতে হলে কিছু খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

আইসক্রিম ও মিষ্টিজাতীয় খাবার

আইসক্রিম বা মিষ্টিজাতীয় খাবারে থাকে উচ্চমাত্রার চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এ দুটো মিলে শরীরে গ্লাইকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত বাড়ায়, যার ফলে কোলাজেন দুর্বল হয়ে যায়। ফলাফল- ত্বক ঝুলে পড়া, বলিরেখা তৈরি হওয়া ও প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারানো। মাঝে মাঝে খাওয়া ক্ষতিকর নয়, তবে নিয়মিত খেলে বার্ধক্য ত্বরান্বিত হয়।

সোডা ও মিষ্টি পানীয়

সোডা ও সফট ড্রিঙ্কস সব বয়সীরই প্রিয়। কিন্তু এগুলোর চিনি ও ফসফরিক অ্যাসিড দাঁত ও হাড় থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নেয়। শুধু তাই নয়, শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং ত্বককে আগেভাগেই বুড়িয়ে তোলে।

প্যাকেটজাত ফলের রস

অনেকে মনে করেন ফলের রস স্বাস্থ্যকর। কিন্তু বাজারি প্যাকেটজাত রসে থাকে না ফাইবার, বরং থাকে প্রচুর চিনি। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ে, প্রদাহ হয় এবং ত্বক স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ঝুলে পড়ে। তাই জুসের পরিবর্তে তাজা ফল খাওয়াই শ্রেয়।

মার্জারিন

মাখনের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে অনেকে মার্জারিন বেছে নেন। কিন্তু এতে থাকে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট, যা রক্তনালী শক্ত করে, ত্বক শুষ্ক করে তোলে এবং বলিরেখার ঝুঁকি বাড়ায়। বরং নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে মাখন তুলনামূলক কম ক্ষতিকর হতে পারে।

কৃত্রিম মিষ্টিকারক

চিনি এড়িয়ে অনেকেই কৃত্রিম সুইটনার ব্যবহার করেন। কিন্তু এগুলো অন্ত্রের স্বাস্থ্য ও বিপাকক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদে এটি বার্ধক্যের প্রক্রিয়া দ্রুত করে। তার চেয়ে সীমিত পরিমাণে মধু ব্যবহার অনেক বেশি উপকারী।

মাফিন, কেক ও বেকারি ফুড

মাফিন, কেক কিংবা অন্যান্য বেকারি ফুডে থাকে ময়দা, চিনি ও ভেজিটেবল অয়েল। এগুলো দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়ায়, এনার্জি ক্র্যাশ ঘটায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। ত্বকের কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ত্বক আগেভাগেই বার্ধক্যের ছাপ ফেলে। চাইলে বাড়িতে ওটস, বাদাম বা শুকনো ফল দিয়ে স্বাস্থ্যকর কুকিজ বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

অ্যালকোহল

অ্যালকোহল শরীরকে ডিহাইড্রেট করে, ভিটামিন এ-এর ঘাটতি তৈরি করে এবং লিভারের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক, ক্লান্ত ও নিস্তেজ। তাই স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের জন্য অ্যালকোহলের পরিমাণ সীমিত রাখা জরুরি।

ত্বকের যত্ন কেবল বাইরে নয়, ভেতর থেকেও শুরু হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাসই ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষার সবচেয়ে বড় উপায়। তাই সুস্থ দেহ ও উজ্জ্বল ত্বক চাইলে ক্ষতিকর এসব খাবার থেকে দূরে থাকুন, আর ভরসা রাখুন পুষ্টিকর প্রাকৃতিক খাবারে।

বাংলাধারা/এসআর