অতিরিক্ত ফল খাওয়া: হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সতর্কবার্তা
প্রকাশিত: অক্টোবর ০২, ২০২৫, ০৪:২৬ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ফল আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবারসহ নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে স্বাস্থ্যকর বলে অতিরিক্ত ফল খাওয়াই আবার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে, েএমন সতর্কবার্তাই দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাভিত্তিক ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. প্রদীপ জামনাদাস।
ফল নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা
সম্প্রতি ‘দ্য ডায়েরি অব এ সিইও’ নামের এক পডকাস্টে কথা বলতে গিয়ে ডা. প্রদীপ বলেন, অনেকে মনে করেন ফল যেহেতু প্রাকৃতিক, তাই যতই খাওয়া হোক ক্ষতি নেই। কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। ফলের প্রাকৃতিক চিনি, ফ্রুকটোজ অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে ইনসুলিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ ও বিপাকক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তার মতে, অতিরিক্ত ফল খাওয়া আসলে হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর খাবারের একটি প্রধান উদাহরণ।
ফ্রুকটোজের ঝুঁকি
ডা. প্রদীপ ব্যাখ্যা করেন, ফ্রুকটোজ মূলত এক ধরনের চিনি, যা অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে লিভারে চর্বি জমে ‘ফ্যাটি লিভার’ তৈরি হয়। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস এবং করোনারি ধমনি রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “অতিরিক্ত ফল খাওয়াই এসব রোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হলো- ফল খেতে হবে মৌসুম অনুযায়ী এবং সীমিত পরিমাণে। মৌসুমি ফলে প্রাকৃতিকভাবে ফ্রুকটোজের মাত্রা বেশি থাকে, তাই তা অল্প করে খাওয়াই ভালো। তিনি সতর্ক করে বলেন, অনেকে ফলের প্রতি অতি-আসক্ত হয়ে পড়েন। উদাহরণ টেনে তিনি জানান, তার এক রোগী প্রতিদিন তিন বেলা শুধু ফলই খেতেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ফল খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করলে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে।
ফল নিঃসন্দেহে উপকারী, তবে ‘অতিরিক্ত ভালোও খারাপ’—এ কথাটি ফল খাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার নামে অতি মাত্রায় ফল খাওয়ার পরিবর্তে মৌসুমী ফল সীমিত পরিমাণে খাওয়াই হতে পারে সুস্থ হৃদযন্ত্র ও সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।
বাংলাধারা/এসআর