ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ঐকমত্য কমিশনের সভা বর্জন করল বাম দলগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ১১:২৭ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

বায়াত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে যাওয়ার অভিযোগ তুলে ঐকমত্য কমিশনের চলমান বৈঠক বর্জন করেছে দেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলো। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠক চলাকালে এ সিদ্ধান্ত নেয় দলগুলো।

বৈঠক বর্জনকারী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাসদ, বাসদ ও বাসদ (মার্কসবাদী)। বৈঠক ত্যাগের পর দলীয় নেতারা সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রস্তাবিত খসড়ায় সংবিধানের মূল চার নীতির প্রতিফলন নেই, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।

কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে যে প্রস্তাব আনা হয়, সেখানে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করা হয়। বাম দলগুলোর দাবি, এতে সংবিধানের মূল চার ভিত্তি বাদ পড়ে গেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

অন্যদিকে, কমিশনের বৈঠকে বহু প্রতীক্ষিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রস্তাবনা পাস হয়েছে। যদিও বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো এই পদ্ধতিকে সমর্থন করলেও এর গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধিতা করেছে।

কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধীদল থেকে), প্রধান দুই দলের বাইরে তৃতীয় বৃহত্তর দলের একজন প্রতিনিধি এবং দুইজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির অংশগ্রহণে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত সদস্যদের মধ্য থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও সদস্যদের মনোনয়ন দেবে।

তবে বিএনপি, সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, লেবার পার্টি এবং খেলাফত মজলিস এই গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। তারা র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতির বিরোধিতা করে সংসদকেই সরকার গঠনের দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।

সব মিলিয়ে, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার এই প্রচেষ্টায় কিছু অগ্রগতি হলেও, দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ এখনও প্রকট। বিশেষ করে সংবিধানের মূলনীতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাধারা/এসআর