জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন তিন বাহিনীর প্রধান
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৯:০৯ রাত

ছবি: সংগৃহিত
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী আগামী শনিবার (১৬ আগস্ট) সারা দেশে নানা আয়োজনে উদযাপিত হবে। উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, যা যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর পলাশী মোড়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করবেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান। শোভাযাত্রাটি প্রতি বছরের মতো একই পথ ঘুরে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে শেষ হবে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে জন্মাষ্টমী উৎসব-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতারা সভায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ঘোষিত হলেও বাস্তব পরিস্থিতি তা ধারণে ব্যর্থ হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্রতা কিছুটা কমলেও তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বরং নীরব চাঁদাবাজি ও হিন্দু শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার মতো নতুন ধরনের নিপীড়ন বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক।
নেতারা অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননার কথিত বা পরিকল্পিত অভিযোগ তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সম্প্রতি লালমনিরহাট ও রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, কেউ ধর্ম অবমাননা করলে তার বিচার হওয়া উচিত, কিন্তু প্রকৃত সত্য যাচাইয়ের আগেই অভিযুক্ত করে নির্বিচারে সহিংসতা চালানো অনৈতিক ও অমানবিক। এসব ঘটনায় নারীরাও প্রকাশ্যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
সভায় আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশকে ‘এক পরিবার’ হিসেবে দেখার ঘোষণা দিলেও গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলোতে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়নি। প্রায় এক ডজন কমিশনের মধ্যে মাত্র দুটিতে দুজন সংখ্যালঘু সদস্য রয়েছেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো কমিটিতেই তাদের স্থান নেই। নেতারা মনে করেন, নতুন বাংলাদেশের ধারণায় প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা জরুরি।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সংখ্যালঘুদের জীবনযাপন হুমকির মুখে পড়েছে। নারীরা রাস্তায় বের হলে কটূক্তির শিকার হচ্ছেন এবং প্রতিবাদ করলে আরও ভয়ঙ্কর ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতা ও হীনম্মন্যতায় ভুগছেন। সভায় আরও বক্তব্য দেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, সহসভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সহসভাপতি বাবুল দেবনাথ ও শ্যামল কুমার রায়, যুগ্ম সম্পাদক শুভাশীষ কুমার বিশ্বাস (সাধন) এবং ব্রজগোপাল দেবনাথ।
বাংলাধারা/এসআর