তিন দলের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ১১:০৩ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার (৩১ আগস্ট) তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকেল ৩টায় বিএনপির সঙ্গে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৪টায় জামায়াত এবং সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে বসবেন তিনি। শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এর আগে সর্বশেষ গত ২২ জুলাই বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ড. ইউনূস। ওই সময় বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তী দুই দিন তিনি আরও ২৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন।
গত বছরের ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিন পরই, ১১ আগস্ট তিনি প্রথমবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর থেকে যখনই উত্তেজনা বেড়েছে, তখনই ড. ইউনূস দলগুলোকে আলোচনায় ডেকে নিয়েছেন। গত এক বছরে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে তাঁর পাঁচ দফা বৈঠক হয়েছে।
নতুন করে বৈঠকের উদ্যোগ এসেছে শুক্রবার গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনার পর। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও সেনাসদস্যদের হাতে নুর গুরুতর আহত হন। তাঁর মাথায় আঘাত লাগে এবং নাকের হাড় ভেঙে যায়। এই প্রেক্ষাপটেই তিন দলের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে অন্য দলগুলোও বৈঠকের আহ্বান পেতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
সরকার ইতোমধ্যে নুরের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে জুলাই সনদ এবং নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শনিবার আবারও স্পষ্ট করেছেন,“নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে।” বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও একই সুরে বলেছেন, “আল্লাহ ছাড়া ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারও নেই।”
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানিয়েছেন, তাঁরাও বৈঠকে অংশ নেবেন। অন্যদিকে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, নির্বাচনের সময় নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং পিআর পদ্ধতিতে ভোট নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কয়েকজন উপদেষ্টার বিশেষ বৈঠকেও নুরের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং স্বরাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী। সেখান থেকেই তিন দলের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে; জনগণের প্রতি এটি অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার। নির্বাচন বিলম্বিত বা বানচাল করার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।”
বাংলাধারা/এসআর