ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ ও গণভোটের প্রস্তাব ভাবছে ঐকমত্য কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৯:৫৩ সকাল  

ছবি: সংগৃহিত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি ও গণভোট আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশন মনে করছে, সংস্কারকে টেকসই করতে গণভোটের পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দিতে হবে, একদিকে সংসদ, অন্যদিকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কমিশন দুটি পথ বিবেচনায় রেখেছে। প্রথমটি- বিশেষ আদেশ জারি করে পুরো জুলাই সনদকে সরাসরি গণভোটে দেওয়া। দ্বিতীয়টি- সনদের কিছু প্রস্তাব বিশেষ আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন এবং কিছু প্রস্তাব গণভোটে তোলা। কোন পথে এগোনো হবে, তা শিগগিরই সুপারিশ আকারে সরকারকে জানানো হবে।

গত শুক্রবার ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট সনদে সই করেছে। গণফোরামও এতে যোগ দেবে। তবে এনসিপি, সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ সই করেনি। কমিশন বলছে, এই দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা চলছে।

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ সরকারকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে একটি খসড়া তৈরি হয়েছে, যা বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।

কমিশনের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় উঠে এসেছে, গণভোটে যেতে হলে আগে জুলাই সনদ নিয়ে একটি বিশেষ আদেশ জারি করতে হবে। তবে সেই আদেশে কী কী থাকবে, গণভোটের প্রশ্ন কী হবে এবং নির্বাচন একসঙ্গে হবে নাকি আলাদা, এসব এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। বিএনপি মনে করে, প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে অধ্যাদেশ জারি করে গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনেই করা উচিত। এতে সংসদকে আলাদা ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না, কারণ নির্বাচিতরা জনগণের ম্যান্ডেট অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়ন করবে।

অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি চাইছে, জাতীয় নির্বাচন হওয়ার আগে গণভোট সম্পন্ন করা হোক। তাদের মতে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবসহ পুরো সনদই গণভোটে থাকবে এবং রায় এলে আগামী সংসদকে দ্বৈত ক্ষমতা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ফেব্রুয়ারিতে। দুই দফায় আলোচনার পর জুলাই সনদে ৮৪টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। কমিশন আশা করছে, বিশেষ আদেশ ও গণভোটের মধ্য দিয়ে এই সনদ বাস্তবায়নের পথ শিগগিরই পরিষ্কার হবে।

বাংলাধারা/এসআর