জামায়াতকে ‘রাজনৈতিক প্রতারণার’ অভিযোগ, বিএনপির প্রতিও ক্ষোভ ঝাড়ল এনসিপি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ১১:২৯ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুতে দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে জামায়াতে ইসলামীর ওপর হঠাৎ করেই তোপ দাগল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একইসঙ্গে বিএনপির প্রতিও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দলটি। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জামায়াতের চলমান ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর)’ আন্দোলনকে সরাসরি ‘রাজনৈতিক প্রতারণা’ আখ্যা দেন। এর জবাবে জামায়াত তার বক্তব্যকে ‘বালখিল্য’ ও ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রতিক্রিয়া জানায়।
রাজনৈতিক অঙ্গনে ধারণা করা হচ্ছে, জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মতভিন্নতার কারণেই এনসিপি এমন অবস্থান নিয়েছে। উল্লেখ্য, বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি দল জুলাই সনদে সই করলেও এনসিপি তা করেনি।
এনসিপি চাইছিল, জামায়াতও যেন সনদে সই না করে। সে উদ্দেশ্যে একাধিক বৈঠকও হয় দুই দলের মধ্যে। জামায়াত শুরুতে এনসিপির অবস্থানকে ‘কৌশলগত চাপ’ হিসেবে সমর্থন করলেও শেষ পর্যন্ত সই করে বসে। এই ভিন্ন সিদ্ধান্তকেই এখন এনসিপি ‘প্রতারণা’ হিসেবে তুলে ধরছে।
এনসিপির দাবি, তারা গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান সংস্কারের আন্দোলন চেয়েছিল। অন্যদিকে জামায়াত তাদের স্বার্থে পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থাকেই পিআর পদ্ধতিতে নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। ফলে যুগপৎ আন্দোলনে থেকেও এনসিপি শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ায়।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে বিএনপির প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ পায়। সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের মন্তব্যকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে তিনি ক্ষমা চাইতে বলেন। তার অভিযোগ, জুলাইযোদ্ধাদের আন্দোলনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে বিএনপি।
সালাহউদ্দিন অবশ্য পাল্টা বলেছেন, বিএনপিকে জুলাই অভ্যুত্থানের বিপরীতে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চলছে, যা সফল হবে না।
নাহিদ ইসলামের অভিযোগের জবাবে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের আন্দোলন কোনো প্রতারণা নয়, বরং জাতীয় স্বার্থে সনদে স্বাক্ষর করেছে তারা। দলটির নেতারা বলেন, এনসিপি নিজের মতো রাজনীতি করতে পারে, তবে ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়।
এনসিপি নেতারা অভিযোগ করছেন, জামায়াত সনদ বাস্তবায়নে আইনি কাঠামোর প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে। অপরদিকে জামায়াত বলছে, আইনি ভিত্তি ছাড়া সনদে সই করবে না বলে ঘোষণা দিলেও বাস্তবতার কারণে সই করতে হয়েছে, যাতে সংস্কারের প্রক্রিয়া এগোয়।
তবে তিন দলের নেতারাই জানিয়েছেন, সনদ নিয়ে এই মতভিন্নতা নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট বা সমঝোতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। নির্বাচনী সমঝোতার দরজা এখনো খোলা আছে সবার জন্য।
বাংলাধারা/এসআর