আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী

আজ (২৭ আগস্ট) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া নজরুল শৈশবে পরিচিত ছিলেন ‘দুখু মিয়া’ নামে। তার পিতা কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতা জাহেদা খাতুন। অল্প বয়স থেকেই তিনি সংগীত, সাহিত্য ও নাটকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বহুমুখী প্রতিভার প্রকাশ ঘটান।

কবিতা, গান, উপন্যাস, নাটক, গল্প, প্রবন্ধ থেকে শুরু করে সাংবাদিকতা, সংগীত রচনা, অভিনয়- সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন স্বতন্ত্র স্বাক্ষর। সংগীতে তার সৃষ্ট অসংখ্য রাগ-রাগিনী আজও বাংলা সংগীতের অনন্য সম্পদ হয়ে আছে।

বিদ্রোহ, প্রেম, মানবতা ও সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর সাহিত্য ও সংগীতের মাধ্যমে শোষণ-বঞ্চনা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাতিকে জাগ্রত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর রচনা বাঙালির প্রেরণার অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়ায়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ হিসেবে নজরুলের অবদান আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবি ও তাঁর পরিবারকে ঢাকায় আনা হয় এবং তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে এবং একই বছর তিনি একুশে পদকেও ভূষিত হন।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সকাল ৮টায় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হবে দিনের কর্মসূচি।

বাংলা একাডেমি আয়োজিত মূল অনুষ্ঠান বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। ‘নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। স্বাগত বক্তৃতা দেবেন একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা। সাংস্কৃতিক পর্বে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন টিটো মুন্সী এবং নজরুলগীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহীদ কবির পলাশ ও তানভীর আলম সজীব।

এ ছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

বাংলাধারা/এসআর