ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসছে ইইউ পর্যবেক্ষক দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ০৬, ২০২৫, ১২:১৭ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফরে আসছে। সাত সদস্যের এই দলে থাকবেন তিনজন বিদেশি ও চারজন স্থানীয় প্রতিনিধি। দলটি আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে এবং নির্বাচনের পরিবেশ, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা বিষয়ে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করবে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই সফরের ভিত্তিতে ইইউ সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশে তারা পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কি না। সফরকালে দলটি নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে।

ব্রাসেলসের (ইইউ সদর দপ্তর) একটি সূত্র কালবেলাকে জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম স্বাগতিক দেশের সম্মতি ও নিজেদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এবারের সফরও সেই কাঠামোর মধ্যেই হচ্ছে।

ইইউ সাধারণত দুই ধাপে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালায়। প্রথম ধাপে প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল পাঠিয়ে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি, লজিস্টিক সুবিধা এবং নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়। এই দল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে সদর দপ্তরে পাঠায়। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইইউ সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হবে কি না।

এর আগে ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠালেও ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তারা কেবল অনুসন্ধানী দল পাঠিয়ে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে।

এবারের নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে দলটির নিবন্ধনও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি ইইউ পর্যবেক্ষকদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠতে পারে। কারণ ইইউ সাধারণত এমন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে, যেখানে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত থাকে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে।

যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচন আগামী বছরের রমজানের আগেই হতে পারে। এ বছরের জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সম্মতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইইউর এই সফর শুধুই একটি রুটিন পর্যবেক্ষণ নয়, বরং এটি দেশের নির্বাচনী ভবিষ্যৎ ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়া এবং নির্বাচন কমিশনের অবস্থান, এই দুয়ের ওপর নির্ভর করছে ইইউর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

বাংলাধারা/এসআর