ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি: প্যারিসের মেয়রকে ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০২:৫২ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে অগ্রসর হচ্ছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচন হবে দেশের গণতন্ত্রে এক নতুন যুগের সূচনা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্যারিস শহরের মেয়র অ্যানে হিদালগোর সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, ক্রীড়াঙ্গনে সামাজিক ব্যবসার সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিক মানবিক সংকট, বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আগামী নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি ভিত্তিমূলক ঘটনা হয়ে উঠবে, যা গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আরও দৃঢ় করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন উভয় নেতা। তারা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জীবনমান উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক তহবিল বৃদ্ধি প্রয়োজন। ড. ইউনূস জানান, জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, যার লক্ষ্য হবে এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ পুনরুজ্জীবিত করা এবং একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা।

অলিম্পিক গেমসকে সামাজিক পরিবর্তনের একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত করার লক্ষ্যে ড. ইউনূসের ভূমিকার কথাও উঠে আসে আলোচনায়। তিনি প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে সামাজিক ব্যবসার মডেলে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতের সকল অলিম্পিক, বিশেষ করে আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিককে কার্বন নিরপেক্ষ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

ড. ইউনূসের মানবিক ও সামাজিক অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মেয়র হিদালগো বলেন, এই সংকটময় সময়ে তার নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ড. ইউনূস মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং তার কাজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। মেয়র আশা প্রকাশ করেন, একদিন রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবে।

বৈঠকের শেষে ড. ইউনূস মেয়র হিদালগোকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, এই সফর মানবিক সহযোগিতা এবং সামাজিক ব্যবসার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। এ সময় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাধারা/এসআর