বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চীনের ইতিবাচক মনোভাব: মির্জা ফখরুল
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৫, ০৭:১৯ বিকাল

ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চীনের মনোভাব অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে চীন আশাবাদী।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সম্প্রতি মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পাঁচ দিনের চীন সফর শেষে দেশে ফেরে।
সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিকে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানিয়েছি।”
তিনি জানান, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দুই বছরের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব বিএনপি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চীনের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ও তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংসং-এর সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিএনপির পক্ষ থেকে ‘এক চীন নীতি’র প্রতি আমাদের দলীয় অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের নেতৃত্বে দেশটির অভূতপূর্ব উন্নয়ন এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) ইতিবাচক দিকগুলোর প্রশংসা করেছি।”
এই বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লি হংসং।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা চীনকে অনুরোধ করেছি ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাবনা বিবেচনার জন্য। চীন এই বিষয়গুলো সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।”
বিনিয়োগ, অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা
সফরের দ্বিতীয় দিনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সুং-ওয়ে-ডং এর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে অবকাঠামো, পরিবেশ, এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে চীনের ভূমিকা আরও বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে শ্রমশক্তির সক্ষমতা, উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা জোরালোভাবে তুলে ধরেছি।”
সফরে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ছিল বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নির্মাণ, দেশের উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ ও রপ্তানি সুবিধা বৃদ্ধি, কুনমিংয়ের চারটি বিশেষায়িত হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সহজতর করা এবং চীন-বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ।
সফরসঙ্গীদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ছিলেন।
বাংলাধারা/এসআর