রাজধানীর বাজারে চাল-সবজির দাম চড়া, কমেছে ডিম-মুরগির দাম
প্রকাশিত: জুলাই ০৪, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
কোরবানির ঈদের পর থেকেই রাজধানীর বাজারে উর্ধ্বমুখী চালের দাম। তার সঙ্গে গত দুই সপ্তাহ ধরে সবজির দামও লাফিয়ে বেড়েছে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে নিত্যপণ্যের বাজারে। তবে স্বস্তির খবর হলো, মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে, যদিও এতে আবার লোকসানে পড়ছেন খামারিরা।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মূলত মোকামেই চালের দাম বেড়ে গেছে। চালকল মালিকরা ঈদের পর থেকেই দাম বাড়িয়েছেন। প্রতি বস্তায় ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এখন প্রতিকেজি মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকায়। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮০ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৬ টাকায়।
মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, “নাজিরশাইল বাদে পাইজাম, বিআর-২৮, মিনিকেটের দাম কেজিপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে পাইকারিতে মিনিকেট কিনতাম ৬৮ টাকায়, এখন কিনছি ৭৬ টাকায়।”
ছোট বাজার ও পাড়ার মুদি দোকানগুলোতে দাম আরও কিছুটা বেশি। রামপুরা বাজারের চাল বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, “ঈদের পর থেকে যেই চাল অর্ডার দিচ্ছি, তার দামই বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়াসহ সব মোকামে দাম ঊর্ধ্বমুখী।”
সবজির বাজারও চড়া। আজ বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধন্দুল ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা এবং আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় কেজি দরে।
শান্তিনগর বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সালমান সাকো বলেন, “বাজারে সবজির দাম কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে। আজও আগের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হলো। কিছুদিন আগেই সবজির দাম তুলনামূলক কম ছিল।”
সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা রাজু আহমেদ বলেন, “অনেক সবজির মৌসুম শেষ হয়ে এসেছে। ফলে সরবরাহ কম। নতুন মৌসুমের সবজি না আসা পর্যন্ত দাম কিছুটা বেশি থাকতে পারে।”
অন্যদিকে ঈদের পর থেকে মুরগির বাজার কিছুটা স্বস্তিদায়ক। কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম কিছুটা বেশি, ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে।
ডিমের দামও কমেছে। বড় বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। তবে দাম কমায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। খুচরা বিক্রেতা বিপুল হোসেন বলেন, “ডিমের দাম অন্তত ১৪০ টাকা ডজন হলে খামারিরা কিছুটা লাভের মুখ দেখে। এখন তাদের বড় ধরনের লোকসান হচ্ছে।”
তবে মুদি পণ্যের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তেল, চিনি, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ, আলু, আদা, রসুনসহ অনেক নিত্যপণ্যের দামও তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে।
বাংলাধারা/এসআর